Published: 04 সেপ্টে 2017
দ্বিতীয় বিশ্বরযুদ্ধের পরিণতি এবং সোনা
বি-উপনেবিশীকরণ এবং তার ফলে 1947 সালে তরুণ দেশ হিসাবে ভারতের স্বাধীনতা লাভ খুব তাড়াতাড়িই এসেছিল, যেটি এই আলোড়ণপূর্ণ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে প্রভাবিত সমস্ত রাজনৈতিক ভুখন্ডগুলির মধ্যে নতুন হিসাবে উঠে আসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কঠিন বিষয় ছিল। পৃথিবী তখন দু’টি বিশ্ব যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় ঘুরপাক খাচ্ছে যা সারা বিশ্ব জোড়া সম্পদ ও অর্থকে নিষ্কাশিত করে নিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, ভারতের আমদানি মূলত হল সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক রাখা মুশকিল ছিল। এটি 1980-র দশক পর্যন্ত চলেছিল, যতক্ষণ না পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন আলাদা দেশে বিভক্ত হয়ে যায়, এর ফলস্বরূপ ভারতের সাথে ব্যবসার সম্পর্কে ব্যাপক প্রভাব পরে।
1991 সালে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মূল কারণ ছিল মুদ্রার মূল্যহ্রাসতা। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমে যায়, যা এক্সচেঞ্জের হারে তীক্ষ্ম অবক্ষয়ের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ভারতবর্ষ এমন একটি দেশ ছিল যার অতীতে আধা-আত্মনির্ভরশীলতার খ্যাতি ছিল এবং তা আগে কখনও অচল হয়নি। এটি এই তরুণ দেশটিকে চকিত করে দিয়েছিল যখন রাজনৈতিক ঘটনা ধীরে ধীরে তরান্বিত হয়েছিল অন্যতম খারাপ একটি অর্থনৈতিক সময়ের দিকে যার সম্মুখিন হতে বাধ্য হয়েছিল দেশ।
ভারতের জন্য আর্থিক সঙ্কটের প্রাথমিক কারণ ছিল 1980-র দশকের পরে বিশাল পরিমাণ বাড়তে থাকা আর্থিক অসাম্য। 1980-র মাঝের দিকে, ভারতে পেমেন্টের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়তে থাকে। 1990-এর দশকে, অর্থনীতি গাল্ফ যুদ্ধের পর একটি তীক্ষ্ম পতন দেখল যা ভারতের চড়া দামের তেল আমদানির রসিদে প্রভাব ফেলে। এটি দেশের ওপর বোঝা সৃষ্টি করে, ক্রেডিটের বা ধারের ক্ষেত্রে সাহায্যও দ্রুত শুষ্ক হতে থাকে, তার ওপর উপস্থিত বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ তুলে নিতে শুরু করে। বড় আর্থিক ঘাটতি দেখা যায়, সময়ের সাথে, ব্যবসার ঘাটতি উপচে পরার চূড়ান্ত পরিণতি হিসাবে বাহ্যিক পেমেন্টের সঙ্কট শুরু হয়।
1990-র শেষের মধ্যে, ভারত গুরুতর আর্থিক সঙ্কটে পরে। ভাগ্যবশত, আমাদের রিসার্ভে প্রচুর পরিমাণে সোনা ছিল। RBI এটিকে ঋণ পরিশোধের একটি উপায় হিসাবে চিহ্নিত করে। তারা সোনার হোল্ডিংসের পুনর্মূল্যায়ন করে এবং সরকারের সাথে মধ্যস্থতার দ্বারা সোনা বন্ধকের মাধ্যমে বিদেশী এক্সচেঞ্জ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়।
1991 সালের এপ্রিল মাসে, সরকার 20টন সোনা বন্ধক দিয়েছিল যা পুনঃক্রয়ের অনুবিধি সহ বিক্রি হয়েছিল। এটাই যথেষ্ট ছিলনা যেহেতু RBI সঙ্কট সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তবে 1934-এর RBI আইনের বিধানের 3টি অনুবিধির দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়েছিল। সোনার একটা ভাবপ্রবণ মূল্য ছিল এবং এটি সরাসরি বিক্রি করা যেতনা, তবে বন্ধক দেওয়া যেত। তারা কেবলমাত্র অন্য মুদ্রার কর্তৃপক্ষের থেকে ধার করার জন্য অনুমোদিত ছিল এবং প্রক্রিয়াটির মসৃণতা নিশ্চিত করার জন্য এই সোনার চালানগুলি ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন করা, প্যাকেজিং করা এবং পাঠানোর কাজটি খুবই কঠিন ছিল।
এই অনুবিধিগুলি কাজটি সম্পাদনের ক্ষেত্রে সত্যিই খুব কঠিন করে তুলেছিল, তবে ট্রানজাকশানে শেষ পর্যন্ত মোট $405 মিলিয়নের লোন সংগ্রহীত হয়েছিল যা সেই সময়ের জন্য অতিশয় পরিমাণ অর্থ ছিল। ভারতের ইতিহাসে এই চূড়ান্ত আর্থিক ব্যবস্থা এবং সোনার গুরুত্ব এখনও বর্তমান অর্থনীতিবিদরা উল্লেখ করে থাকেন।