Published: 04 সেপ্টে 2017
সোনার মান্যতা বলতে কি বোঝায়?
আপনি কি জানেন যে 1870 থেকে 1914 সাল পর্যন্ত আর্থিক ব্যবস্থায় সোনা এক অখন্ড অংশ হিসাবে উপস্থিত ছিল?
চলুন সেই যুগে যাওয়া যাক যখন আর্থিক ব্যবস্থায় এক ঔজ্জ্বল্য ছিল- সোনার মান্যতা।
সোনার মান্যতা কি?সোনার মান্যতা হল একধরণের আর্থিক ব্যবস্থা যেখানে মুদ্রার মূল্য সোনার সাথে যুক্ত থাকে।
এইধরণের মুদ্রাগুলি মুক্তভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনায় পরিবর্তন করা যায়।
এই সিস্টেমের অধীনে, সোনার আমদানী ও রপ্তানী বিধিনিষেধমুক্ত ছিল।
যে দেশগুলি এই মান্যতা ব্যবহার করত তারা সোনার জন্য একটা মূল্য ধার্য করতে পারত।
সোনার সমস্ত ক্রয় ও বিক্রয় তখন সেই মূল্যেই হত।
এমনকি, এইধরণের মূল্য থেকেই, গার্হস্থ্য মুদ্রার মূল্য উদ্ভূত হয়।
সমর্থনকারীযুক্তরাজ্য– 1819
পর্তুগাল– 1854
জার্মানি– 1871
1900 এর মধ্যে, চীন ও কিছু মধ্য আমেরিকীয় দেশ ছাড়া সমস্ত দেশই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বৈশিষ্ট্যসোনার মান্যতার জন্য সেরকম কোন সেট করা নিয়ম ছিলনা।
তবে, আশা করা হত সরকার ও ব্যাঙ্কগুলি কিছু নিয়ম পরিদর্শন করবে।
সেগুলি ‘গেমের নিয়ম’ হিসাবে পরিচিত ছিল।
এর মধ্যে কিছু নিয়ম ছিল:
- দেশগুলির মধ্যে সোনা আমদানী এবং রপ্তানীর ক্ষেত্রে কোন বাধানিষেধ ছিলনা।
- সোনার মান্যতা দ্রুততর করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে চেষ্টা করতে হত।
- সঙ্কটের সময় এই মান্যতা অ-কার্যকর হয়ে যেতে পারে। তবে সঙ্কট পরবর্তি পুনরূদ্ধার আবশ্যিক ছিল।
- বিভিন্ন দেশগুলির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে ন্যায্য পরিমাণ সহযোগীতা আবশ্যিক।
সোনার মান্যতা পরীক্ষামূলক সময়েও দাঁড়াতে পারেনি।/p>
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যুগ এটির বিশাল বড় ভাঙ্গন দেখেছে।
তবে, অনেক দেশই তার পরেও সেই মান্যতাকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
1929সালের মহামন্দার পরে এই একধাতুঘটিত মান্যতা শেষমেশ সম্পূর্ণভাবে ধসে পরে।
সার কথাব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জিওফ্রে ক্রোথের বলেছিলেন, “সোনার মান্যতা হল এক হিংসুটে ভগবান। এটি তখনই কাজ করবে যখন সে অনন্য নিষ্ঠা দেখতে পাবে”।
50 বছর ধরে সোনা আর্থিক ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে রয়েছে, কিন্তু একাধিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কারণ তার পতনের কারণ হচ্ছে।
এটি এখন সম্পূর্ণভাবে ফিয়েট অর্থ দ্বারা প্রতিস্থাপিত, এমন একটি মুদ্রা যা ব্যবহৃত হয় সরকারের আদেশে-বা বিধিসম্মত ক্ষমতাপ্রদানে-এবং পেমেন্টের নামে গৃহীত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি ডলার, ভারতে এটি টাকা, দুবাইতে এটি দিরহাম।
আজ, সোনা মুদ্রা হিসাবে ব্যবহৃত হয়না, কিন্তু চিরকালই অর্থনৈতিক, সামাজিক, আবেগপ্রবণ এবং নান্দনিক মূল্য বহন করে চলেছে।