Published: 08 ফেব্রু 2018
বাঙালী শিল্পীদের শৈল্পিক ধারা
এটি বাঙালীদের জন্য বছরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ছিল। রাস্তাগুলি হাসি, উদ্যম, গান ও উচ্ছ্বাস ভরে থাকত। যতদূর সম্ভব, কেবলমাত্র রাধাই, এই উৎসবের সময় শহরটির জাঁকজমক সম্পর্কে শুনেছিল, তবে, আজ সে নিজে তার সাক্ষী হয়েছে। এটির সাথে তুলনায় একটিই দৃশ্যই তার মাথায় আসছে আর তা হল মুম্বাইয়ের গণেশ চতুর্থী। তবে, কোলকাতা এই জনপ্রিয় দুর্গা পুজোর সময় সম্পূর্ণ অন্য শহর হয়ে যায়। এখানে তার আসার উদ্দেশ্য যদিও অন্য ছিল, তবু সে এমনভাবে এই ট্রিপটার পরিকল্পনা করেছিল যাতে এই চমৎকার উৎসবটিও সে একই সাথে দেখতে পারে।
সে এখানে স্থানীয় শিল্পী ইন্দ্রনীলের সাথে কথা বলতে এসেছিল। সে বাঙালী শিল্পীদের সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছিল এবং পড়েছিল আর সে সম্পূর্ণভাবে তাদের চারুকলা ও সৃজনশীলতাকে সমীহ করে চলে। ইন্দ্রনীলের সাথে তার ওয়ার্কশপে মিটিংটা ছিল ভয়ঙ্কর-উত্তেজক। কিন্তু কেন সে ইন্দ্রনীলের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিল? আসলে, একজনের হয়ে, সোনার বারের আকার দেওয়ার জন্য রাধার ইন্দ্রনীলকে প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যদিও সে গহনার ডিজাইনিংয়ের উদ্দেশ্যে গিয়েছিল, আসলে সে এই সৃজনশীল শিল্পীকে তার দলে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল।
কেউ হয়তো ভাবতে পারে, কেন শুধু বাঙালী শিল্পী, কেন অন্যরা নয়? এখানে তার কারণগুলি দেওয়া হল :
-
উচ্চ দক্ষতার শিল্পকুশলতা
ফিলিং, শ্যয়িং, ফোর্জিং, কাস্টিং, পলিসিং এবং শেষমেশ সোনার গহনায় একটি আকার দেওয়ার ক্ষেত্রে বাঙালী শিল্পীদের দক্ষতা আমাদের সবার আকাঙ্খিত এবং সেগুলি পরতে ভালোবাসি, এগুলির জুড়ি মেলা ভার। তাদের হস্তকৃত গহনা এতোটাই জনপ্রিয় যে রাধার কিছু ক্লায়েন্টরা কেবলমাত্র বাঙালী শিল্পীদের ডিজাইন করা গহনার কথা শুধু বলে।
-
গহনার বাজারে বাঙালী শিল্পীদের ভূমিকা
রাধা কোথাও পড়েছিল যে ভারতে হস্তকৃত গহনা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সমস্ত শিল্পীদের 70% পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে আসে। এটি মোট শিল্পীদের অর্ধেকেরও বেশি, তাই অবশ্যই যখন তার নিজের জন্য কোন ডিজাইনের প্রয়োজন হয়, তখন একজন বাঙালী শিল্পীর খোঁজ অর্থবহ।
-
সৃজনশীলতার চাহিদা বৃদ্ধি
তার বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট চায় অনন্য ডিজাইন, এমন কিছু যা কেউ আগে দেখেনি বা পরেনি; এমন কিছু যার সম্পর্কে তারা বলতে পারে যে তারা বিজ্ঞাপন, সিনেমা অথবা টিভি শোতে দেখেছে। উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন দলের সাথে একজন জহুরি জানে কিভাবে আবিষ্কার সবসময় সফল হয়। বাঙালীরা সবসময় তাদের সাহিত্য, সঙ্গীত, অঙ্কণ এবং অন্যান্য কলার প্রতি জ্ঞানের জন্য জনপ্রিয়। সোনার গহনার ডিজাইন নিজেই একটি কলা; এমন একটি চারুকলা যা কোন মহিলার (কখনও কখনও পুরুষদের) সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করে। তাই, এটি আসলে খুব একটা আশ্চর্যের বিষয় নয়, যে রাজ্যটি চারুকলার প্রতি তার ভালোবাসার জন্য পরিচিত সেটি দেশকে সোনার গহনার ডিজাইনে কলা ও সৃজনশীলতা দিক থেকেও আরেকটি রূপ প্রদান করবে।