Published: 12 সেপ্টে 2017
সোনা ছিনতাইবাজ
ভারতের মহানগরগুলি প্রচন্ড ব্যস্ত হয়ে পরছে। যেহেতু শহরগুলি আরও জনবহুল হয়ে উঠছে, পৌর নিগমের যে কর্মীরা এই শহরগুলিকে চালাচ্ছে, তাদের আরও দায়িত্ব বাড়ছে। মুম্বাই এমন একটি নজর রাখার মত শহর হয়ে উঠছে, যেটি সদা ব্যস্ত, এমনকি যদি আপনি আপনার জুতো পায়ে দিয়ে মুম্বাইয়ের রাস্তায় একটু পাইচারি করেন, তাহলেই বাস্তবের সম্মুখিন হবেন।
এক দল লোক খবরের কাগজ বাছাই করছে, কেউ আবার ডেলিভারির জন্য দুধের প্যাকেট স্থানান্তরিত করছে, একটা পরিবার পুজোর ফুলের প্যাকেট তৈরি করছে, সবাই কিন্তু একটা সংহতি রেখে তাদের রোজনামচার পিছনে ছুটে চলেছে। এক দল যুবক এই সকালের কাজে যোগ দিল। যদিও এদের এই ভিড়ের মধ্যে একটু আলাদা লাগছে। তাদের বাইকগুলিতে এখনও আওয়াজ হচ্ছে, তারা সেগুলি রাখার একটা জায়গা খুঁজছে এবং সামনের ম্যানহোল আর নর্দমাগুলি দেখছে। তাদের অবশ্যই হস্তকৃত ঝাঁড়ুদারের মত দেখায় না, তবুও তাদের মাত্র পাঁচ মিনিট মত লাগল এই ড্রেনের কাছে তাদের ব্যবসা শুরু করতে। এই ছেলেগুলি কে, আপনি ভাবছেন তো? প্রায় দু’ঘন্টা তাদের লক্ষ্য করার পর, তাদের আসল পেশাটা কি স্পষ্টতর হল।
প্রায়ই, শহরগুলিতে এমন কিছু এলাকা আছে যেগুলি বিশেষ কিছু পণ্যের জন্য বাজারের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। মুম্বাইয়ের সোনার কেন্দ্র, জাভেরি বাজারে এরকম অনেক ‘বাইকে আরোহী হস্তকৃত ঝাঁড়ুদার’ দেখা যায়, যারা আদতে পৈর নিগমের ভূমিকায় থাকেনা। না, তারা রবিন হুডের মত সন্তও নয় যে মুম্বাইয়ের নর্দমা ও গর্তগুলি স্ব-ইচ্ছায় পরিষ্কার করে। এরা হল ধনের শিকারী; এরা শশব্যস্ত শহরগুলির সোনার অনুসন্ধানকারী। আসলে, জাভেরি বাজার এলাকার চারধারের নর্দমাগুলিতে সোনার গুঁড়ো পাঁকের সাথে মিশে থাকে। এই শিকারীরা চুম্বক ব্যবহার করে এবং আবর্জনা থেকে ধাতু আলাদা করার জন্য চালুনি দিয়ে চালে এবং অন্য ধাতু থেকে সোনা আলাদা করে যে ব্যক্তি তাকে এই ধাতুটি দিয়ে দেয়।
এই পদ্ধতির পরবর্তি ধাপ হল ফিল্টারিং ইউনিট যেখানে লোকেরা আবর্জনা জমা করে এবং সাধারণত পিতলের মত সমান্তরাল খোঁজের দিকে তাকিয়ে থাকে। জমানো সোনা বহিষ্কারের জন্য তারা পারদ ব্যবহার করে এবং এভাবেই চলে। একবার এটি সংগ্রহ করা হয়ে গেলে, সোনা একই এলাকার ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
এটি এখন একটি সংগঠিত ব্যবসা, যে সাম্রাজ্যের রাজা পুরো এলাকা জুড়ে অপারেশানটি চালায়। তারা কর্মীদের এবং অসংগঠিত শ্রমিকদের নেটওয়ার্কগুলিকে বেতন দেয় যাতে এই ইউনিটটি মোলায়মভাবে চলতে পারে। এক্ষেত্রে বলা অপ্রয়োজনীয়, তারা হস্তকৃত ঝাঁরুদারের তুলনায় এরা অনেক বেশি টাকা পায় এবং সেই কারণেই, পৌর নিগমের পরিষ্কার ইউনিটের ক্ষয় অবশ্যই ধন শিকারের ব্যবসায় আশির্বাদ স্বরূপ।