Published: 27 সেপ্টে 2017
জীবজন্তুর দ্বারা প্রভাবিত সোনার গহনার ডিজাইন
গহনার ডিজাইনের জন্য জীবজন্তুর রাজত্ব সবসময়ই একটা বড় উৎসস্থল। ইতিহাসের সর্বত্র, চিতাবাঘ, বাঘ বা সিংহের মত পশুদের চিত্র কিছু অনন্য গহনার নকশায় খোদাই করা হয়েছে। জীবজন্তুর জাদুর ছোঁয়ায় এমন কিছু গহনার নিদর্শন দেখে নেওয়া যাক।
গুনুস: পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন জনপ্রিয় গহনা হল গুনুস। গুনুস খাঁটি সোনার একটি মোটা বালা যার দুটি প্রান্তে সাপ বা সিংহের মাথা থাকে। এই শিল্পকলাটি একটি অপূর্ব সৃষ্টি, যেখানে বিভিন্ন পশুর চিত্র বালার মধ্যে খোদাই করা থাকে।
অসমের লোকা পারো একটি প্রসিদ্ধ প্রাচীন গহনা যা পায়রার দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি একটি পেনডেন্ট যেখানে দু’টি পায়রা বিপরীত মুখে রয়েছে এবং সেই দু’টি সোনা দ্বারা সংযুক্ত। এই অলঙ্কারটি “পাট সুন” নামেও পরিচিত। উপলব্ধ ডিজাইনগুলিতে, পায়রাগুলি একটি মোটা নেকলেসে ঝোলানো থাকতো, নেকলেসগুলি রঙিন পুঁতির মাঝে বড় সোনার পুঁতি দিয়ে একাধিক সুতোয় তৈরি হত।
সাম্প্রতিক অতীতে কালো সিংহের নেকলেস ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এটি নেকলেসের একটি বিরল উদাহরণ তথা এর ডিজাইনও অনন্য, সাধারণত এটি পুরুষদের গহনার শ্রেণীতে পরে। সোনার নেকলেসের ওপর কালো সিংহের চিত্র খোদাই সত্যিই সৃষ্টির অনন্য উদাহরণ।
সোনার হিঙ্গি ব্রেসলেট সাধারণত 20ক্যারেট সোনায় তৈরি হয় এবং তাদের একটি প্রান্তে হাতির মুখ থাকে। এই গহনাটি ওড়িষা রাজ্যে খুবই জনপ্রিয়।
সোনার কাড়ার নিখুঁত ডিজাইনে প্রায়ই জীবজন্তুর চিত্র থাকে। তার মধ্যে হাতির জড়ানো শুঁড়, কুমির বা ময়ূরের নাম উদাহরণস্বরূপ বলা যায়।
আধুনিক ডিজাইনাররাও তাদের ডিজাইনে জীবজন্তুর চিত্র খোদাই করে। কালো লাভা স্টোনের সাথে সোনার সিংহের ব্রেসলেট সাম্প্রতিককালে বেশ প্রচলিত হয়ে উঠেছে। এই গহনাটি 10মিমি উচ্চ গুণমান সম্পন্ন লাভা স্টোন দিয়ে তৈরি হয়, এক্ষেত্রে প্রতিটি স্টোনে আলাদা কণা দেওয়া হয়।
পুরুষদের জন্য প্রাচীন সোনার লায়ন কাফলিঙ্ক যেমন নিখুঁত শিল্পের অসামান্য নিদর্শন তেমনই এটি আজও প্রচলিত।
বিশ্ব-খ্যাত ভারতীয় গহনা আম্রপলী সোনার বালাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে, এটির বৈশিষ্ট্য হল দুটি হিংস্র সিংহের গর্জনরত মস্তক। নক্সি কাজের বালা বিশ্ব জুড়ে প্রচন্ড প্রচলিত এবং তারকাদের পছন্দের।
প্রকৃতির সৌন্দর্য অনুকরণের আকাঙ্খাই সভ্যতার আদিকাল থেকে গহনার ডিজাইনকে অনুপ্রাণিত করে, আর এই নিরন্তন আকর্ষণ আজও ডিজাইনারদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।