Published: 19 জুন 2018
কসমেটিকস বা রূপসজ্জায় সোনার ঐতিহাসিক এবং আধুনিক ব্যবহার

‘ধাতুর রাজা’ অথবা ‘জীবনের স্পর্শমণি’ এই অভিব্যক্তিগুলি কেবলমাত্র সোনাকে চিহ্নিত করতেই ব্যবহৃত হয়। এর কারণ এই বিশেষ ধাতুটি কেবলমাত্র গহনা, বিনিয়োগ অথবা বৈদ্যুতিক সরঞ্জামেই সীমাবদ্ধ নেই। বহু শতাব্দী আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সোনা কার্যকরভাবে রূপসজ্জাতেও ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
ত্বকের পরিচর্যায় সোনার ব্যবহার শুরু হয় লেই মিশরীয় রানি ক্লিয়োপেট্রা এবং নেফেরটিটির সময় থেকে যারা ঘুমানোর আগে সোনার মুখোশ পরে শুতেন বলে জনশ্রুতি আছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কেন এই সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তিরা তাদের ত্বকের পরিচর্যার জন্য কেন সোনার সক্ষমতার ওপর বিশ্বাস করেছিল।
প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্যের কারণে
প্রায়সই সোনার বিশিষ্টতা সমেত ফেস প্যাক রানি ও রাজকুমারীরা তাদের ত্বকের দৃঢ়তা বাড়াতে এবং সেটিকে সজীব ও উজ্জ্বল রাখতে ব্যবহার করত। মনে করা হয় সোনার কণাগুলি ত্বক আরও উজ্জ্বল করে এবং এটিকে হাইড্রেট রাখে।
বার্ধক্যের প্রক্রিয়া মন্থর করে
সোনার মুখোশ ত্বকের কোলাজেনের স্তর কমানোর প্রক্রিয়ার সহায়ক। এটির রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলি টিস্যুর স্থিতিস্থাপকতা পুনরুদ্ধার, বলিরেখা-মুক্ত ত্বক নিশ্চিত করার জন্য পরিচিত।
প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের নিরাময় করে
মিশরীররা বিশ্বাস করত যে সোনার ভেষজ বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বকের নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে। সোনা সোনা প্রদাহ-বিরোধী আবেষ্টন এবং ব্যকটেরিয়া-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত যা কোষগুলির পুনর্জীবনে সাহায্য করেছিল। এটি প্রদাহমূলক ত্বকীয় ব্যাধির চিকিৎসায় সহায়ক ছিল।
কসমেটিক আবিষ্কারগুলির অগ্রগতি আগের থেকে আরও দ্রুত হচ্ছে, এক্ষেত্রে তাই কোন আশ্চর্যের বিষয় নেই যে সোনা আধুনিক ত্বকের পরিচর্যাতেও তার স্থান করে নিয়েছে। দু’টি উপায়ে সোনা রূপচর্চায় ব্যবহৃত হয়- মাস্ক অথবা ক্রিমে উপকরণ হিসাবে; অথবা ত্বকে সরাসরি প্রয়োগের জন্য সোনার ফলক অথবা পাতা।
সোনার ন্যানোপার্টিকেলগুলি কার্যকরভাবে বিশ্বের বৃহত্তম কয়েকটি রূপচর্চার ব্র্যান্ডে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চলুন একবার সেই কারণগুলি দেখে নিই যা আধুনিক ত্বকীয় পরিচর্যা এবং ত্বক বিজ্ঞানে সোনার ভূমিকাকে সমর্থন করে:
ত্বকের অস্বাভাবিকত্ব কমায়
সোনা তার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত যেটি ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ায় আর তার ফলে ব্রণ এবং ত্বকের ব্যাধি কমে।
কোষের পুনরুদ্ধার
আঠালো সোনা (জলে থিতিয়ে থাকা সোনার ন্যানোপার্টিকেল) ত্বকের কোষগুলির মধ্যে ভগ্ন সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং সেগুলির নিয়মিত পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। ফলত, নতুন কোষ তৈরির ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে পুরানো জীর্নগুলিকে প্রতিস্থাপিত করে।
সূর্যের ক্ষতি থেকে প্রতিরোধ করে
ত্বকের ট্যানিংয়ের জন্য পিগমেন্ট দায়ী, তাই যখন সূর্যালোকে আপনি বেড়োন তখন মেলালিন হয়ে যায়। সোনার ন্যানোপার্টিকেলগুলি শরীরে মেলালিনের উৎপাদন কমাতে পারে, যার ফলে আপনার ত্বকে সূর্যের থেকে ক্ষতি রোধ হয়।
আধুনিক সমাজে সূক্ষ্ম গহনা থেকে শুরু করে নিখুঁত বুননের কাপড় হয়ে বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এবং দাঁতের ক্রাউন সবেতেই সোনা একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং রূপচর্চার শিল্পে এটির ভূমিকা এক্ষেত্রে তার গৌরবোজ্জ্বল মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করেছে।