Published: 12 সেপ্টে 2017
জাতীয় জাদুঘর ভারতীয় সোনার গহনার বিবর্তন ধরে রেখেছে।
ভারতীয় সোনার গহনার উদ্ভাবন খ্রি.পূ. 3000 অথবা খ্রি.পূ. 5,000 বছর আগে হয়েছিল। তখন থেকে, ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় গহনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। ভারতীয়রা বিশ্বাস করে যে সোনার গহনা যেমন পবিত্র তেমনই শুভ; তাই তারা এটি গর্বের সঙ্গে পরে।
গহনা প্রেমীরা জানলে খুশি হবে যে তারা নয়া দিল্লির জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে তাদের আবেগকে আরও চরিতার্থ করতে পারে, যেখানে সিন্ধু সভ্যতা থেকে শুরু করে ভারতের রাজারাজদের অলঙ্কার সজ্জিত আছে। 1949 সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জাতীয় জাদুঘর ভারতের অন্যতম বড় একটি জাদুঘর। জাতীয় জাদুঘর গর্বের সাথে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত পরিসরের চিত্রশিল্প এবং অলঙ্কার সাজিয়ে রেখেছে।
এই জাদুঘর তার ‘অলঙ্কৃত গ্যালারি’তে সোনার গহনার ব্যাপক সংগ্রহ প্রদর্শন করে রেখেছে। এই গহনায় উৎসর্গীকৃত গ্যালারিটি অলমকারা নামে পরিচিত-অর্থাৎ অলঙ্কারের সৌন্দর্য। এই গ্যালারিটিতে প্রায় 250টি অলঙ্কার এবং সম্পর্কিত আইটেম প্রদর্শিত হয়েছে। অলমকারার প্রদর্শনীতে রয়েছে সাধারণ প্রাত্যহিক পোশাক, দেবী, দেবতা, পুরুষ, মহিলাদের অলঙ্কার এমনকি শিশুদের কবচ থেকে শুরু করে সেরা শিল্পকর্মগুলি পর্যন্ত। এই ঐতিহাসিক অভিযান অতীত ভ্রমণের বাসনাকে ফিরিয়ে আনে।
হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদারোর পুঁতির নেকলেস সেই যুগের বুদ্ধিমত্তা এবং নিখুঁত কর্মপদ্ধতিকে প্রকাশ করে। ভারতের প্রাচীন রাজারাজদের ব্যবহৃত মনমুগ্ধকর গহনায়, সেরা শিল্পকর্মের পিছনে জহুরিদের নিখুঁত চারুকলা প্রদর্শন করে। যদিও বিভিন্ন অধ্যায়ের খুব কম গহনাই এখনও বিদ্যমান রয়েছে, তবে জাদুঘরের কর্তৃপক্ষ মৌর্য্য, শুঙ্গ, সাতবাহন, কুষাণ এবং গুপ্ত বংশের অলঙ্কার সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছে।
এইসাথে অতিরিক্তভাবে, অলঙ্কৃত গ্যালারির শিল্পকলার সংগ্রহে দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত তাঞ্জোর এবং মাইসোর পেইন্টিংও প্রদর্শিত হয়েছে। এই পেইন্টিংগুলির তৈরিতে সোনার ব্যবহার করা হয়েছে, যা আবারও ভারতীয়দের সোনার আবেশকে প্রমাণিত করে। এই পেইন্টিংগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভারতীয় পুরানকথা এবং বিভিন্ন দেবী দেবতার কাহিনীকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে।
অলঙ্কৃত গ্যালারিতে কয়েন গ্যালারির কক্ষও রয়েছে যেখানে দর্শকরা গুপ্ত, মুঘল এবং ইন্দো-ব্রিটিশ যুগের কয়েন দেখতে পায়। গুপ্ত রাজবংশের সোনার কয়েন বেশ আকর্ষণীয়।
সব দিক থেকে বললে, জাতীয় জাদুঘর ভারতীয় সোনার গহনার বিবর্তনকে ধরে রেখেছে। প্রসিদ্ধ অলামকারা এবং অন্যান্য গ্যালারিগুলি জাতীয় জাদুঘরকে রাজধানী নয়া দিল্লির দর্শনীয় স্থানের মধ্যে “আবশ্যিক দ্রষ্টব্য” করে তুলেছে।