Published: 20 ফেব্রু 2018
ভল্ট B-এর রহস্য
কেরালার তিরুভান্তপূরমের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে গেলে আপনি এমন একটি মন্দির লক্ষ্য করবেন যা রাজ্যটির যেকোন স্থান থেকে দেখা যায়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভগবান বিষ্ণুর আরাধনার জন্য এই মন্দিরে আসে। তবে এখানে কিছু কারসাজি গোপন করা আছে। এ যেন অনেকটাই উন্মুক্ত রহস্য। সেটা কি একবার দেখে নেওয়া যাক?
সম্পদের ভান্ডার-সোনার সিংহাসন, মুকুট, কয়েন, মূর্তি এবং অলঙ্কার, হিরে এবং অন্যান্য মূল্যবান রত্ন সমেত দামি জিনিসের সংগ্রহ। এক মুহুর্ত সময় নিন আর একবার ভেবে দেখুন আপনি হেঁটে চলেছেন এমন এক কক্ষে যেটি সোনা দিয়ে পূর্ণ।
এই সম্পদের ভান্ডার A থেকে F নামের 6টি খিলান বা ভল্টের মধ্যে রাখা আছে। এগুলির মধ্যে ভল্ট (খিলান) B অভিশাপের ভয়ে এখনও পর্যন্ত খোলা হয়নি। আমরা আবার ভল্ট Bর আলোচনায় ফিরে আসব, তবে আগে A, C, D, E এবং F খিলানগুলি দেখে নেওয়া যাক যেখানে কল্পনাতীত মাত্রায় সম্পদ রয়েছে।
এখানে কিছু সম্পদ দেওয়া হল যা পাওয়া গেছে- সারে তিন ফিট লম্বা খাঁটি সোনার মহাবিষ্ণুর মূর্তি, একটি সোনার চেন যেটির দৈর্ঘ্য 18 ফিট, একটি সোনার গোছা যার ওজন 500 কেজি, মূল্যবান রত্ন খচিত 1,200 মোটা সোনার চেন, সোনার নারকেলের মালা যেগুলি চুনি ও পান্না দিয়ে খোচিত।
আর এই সমস্ত কিছুর মধ্যে কিন্তু মূল্যবান রত্ন, নেকলেস এবং প্রাচীন শিল্পকলার বস্তাগুলিকে গণনা করা হয়নি। এমনকি, এখানে নেপোলিয়নের যুগের এবং রোমার সাম্রাজ্যের সোনার কয়েনও আছে। “এই কয়েনগুলির মূল্য অসামান্য যেহেতু এগুলি বিভিন্ন সহস্রাব্দের। এগুলির মধ্যে কিছু যিশুখ্রিষ্টের জন্মের আগে,” এমনই বলা হয়েছে বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিবেদনে।
খিলানগুলি খোলার জন্য প্রধান বিচারালয়ের আদেশের আগে বেশিরভাগজনই এই বিভিন্ন সম্পদের ভান্ডার সম্পর্কে জানত না। খিলানগুলি খোলার পর, আরও দু’টি খুঁজে পাওয়া যায়, যাদের নাম G এবং F। কিন্তু B এখনও বন্ধই আছে, তার কারণ যদি এই ঘরটি খোলা হয় তাহলে কিছু অশুভ ঘটবে বলে লোকেরা ইঙ্গিত পেয়েছিল। প্রবেশদ্বারে একটি সর্প সন্নিবেশিত ছিল যা পুরোহিতরা সাবধানবাণী মনে করে।
আদালতের নিয়োগ করা কমিটির সদস্যরা ভল্ট B-এর ধাতুর-গ্রিল করা দ্বারের পিছনে থাকা মজবুত কাঠের দরজাটি আবিষ্কারের জন্য সেটি খুলেছিল। যখন এই দরজা খোলা হয়, লোহার তৈরি একটি তৃতীয় দরজা অন্বেষকদের বাইরে রাখে। এর ফলে পরিদর্শকরা একজন তালার কারিগরকে ভাড়া করে, কিন্তু ত্রিভাঙ্কোর রাজ পরিবার এই ভল্ট B খোলার বিরুদ্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ পেয়ে যায়।
এই ঘটনাগুলি কেবলমাত্র পুরোহিতদের সতর্কবাণীর সমর্থনকেই প্রমাণ করে।
নিউ ইয়র্কবাসীদের জন্য একটি প্রবন্ধে, জেক হাল্পার্ন লিখেছিলেন “...ত্রিবান্দমের বেশিরভাগ বাসিন্দাই মন্দিরের খিলানগুলি অনুসন্ধান করার বিষয়টি নিয়ে দাবি করেনা। এটা প্রাথমিকভাবে আমাকে দ্বিধাগ্রস্ত করেছিল। আমেরিকার মত দেশ-যেখানে চক্রান্ত-আবিষ্ট তুখোর সাংবাদিকরা “অবসান”-এর ওপর উচ্চ মূল্য দেয়-সেক্ষেত্রে এটা ধারণাতীত বিষয় যে একটি রহস্যময়, বন্ধ দরজা একা পরে আছে। কিন্তু ভারতে হিন্দু মন্দিরগুলিতে সঞ্চয় করে রাখা সম্পত্তিগুলিকে অর্থ, পারিশ্রমিকের তুলনায় ধর্মীয় দিক থেকে বিবেচনা করা হয়।”
হয়তো এইবার, এটা বন্ধ করা যাবে। অন্তত সামান্য সময়ের জন্য হলেও।