Published: 04 সেপ্টে 2017
সোনার ক্ষমতা: বিশ্বের পৌরাণিক ব্যুৎপত্তি
ভারত থেকে উঠে আসা ধর্ম- হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখের সাথে জৈনধর্মের মত কঠোর তপশ্চর্যায় পূর্ণ ধর্মগুলিতে সোনার বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট৷ ভক্তরা দাতব্যে এবং দেবতাকে শ্রদ্ধা জানাতে অনুদান স্বরূপ সোনা বিতরণ করে৷
হিন্দু পুরান জুড়ে সোনার উল্লেখ আছে, যেখানে এটি শক্তির উৎসস্বরূপ, তারই সাথে স্বর্গীয় চেতনার তরঙ্গ প্রেরণ করতেও সমর্থ৷
সোনা শরীরের ক্ষতিকর জীবাণুকে ধ্বংস করে৷-ব্রহ্মাণগ্রন্থ
হিন্দু পুরান অনুযায়ী, সোনা হল বিশ্বের প্রাণ৷ কিংবদন্তি আছে যে অন্ধকারময় প্রাণহীন বিশ্বে সৃষ্টিকর্তা তাঁর শরীর থেকে জল সৃষ্টি করে এবং বীজ বপন করে, যা সোনার ডিমে পরিণত হয়ে সূর্যের মত উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে৷ এই সোনার ডিমটি থেকেই, ভগবান ব্রহ্মা হিসাবে সৃষ্টিকর্তা নিজেই পুনর্জীবন লাভ করে৷ তখন তিনি হিরণ্যগর্ভ নামে পরিচিত হন-যার অর্থ, সোনা থেকে জন্মানো ব্যক্তি৷
হিরণ্যগর্ভ একটি সংস্কৃত শব্দ যেটির অনুদিত রূপ হল “সোনার ভ্রূণ”, “সোনার গর্ভ” বা “সোনার ডিম”৷ এটি হিরণ্য শব্দটি থেকে এসেছে, যার অর্থ “সুবর্ণ” বা “সমৃদ্ধি” এবং গর্ভ শব্দের অর্থ হল “গর্ভাশয়”, “অঙ্কুর/বীজ” বা “সত্তা”৷
সোনা, অগ্নির (আগুনের দেবতা)বীজ হিসাবেও পরিগণিত হয়৷
সমস্ত ধাতুর মধ্যে সোনা সবথেকে বেশি সাত্ত্বিক (সত্ত্বা-কর্তৃত্বপূর্ণ), স্বামী আত্মাশ্রদ্ধানন্দের বই প্রতিদিনের জীবনযাপনের জন্য গীতা:গীতার বার্তা অনুসন্ধান (Gita for Everyday Living: Exploring the Message of the Gita)অনুযায়ী৷ --
সত্ত্বা হল তিনটি গুণের (বিশেষণ) একটি, যে দার্শনিক ও মনস্তাত্ত্বিক ধারণা হিন্দু দর্শনের শঙ্খ বিদ্যালয় তৈরি করেছিল৷ এটি পরোপকারিতা, ইতিবাচকতা, সত্য, সুস্থতা, প্রশান্তি, অখন্ডতা, সৃষ্টিশীলতা, গঠনশীলতা, ভারসাম্য, বিশ্বাস, শান্তি এবং শুদ্ধাচারের গুণ যা ধর্ম ও জ্ঞানের অভিমুখে নিয়ে যায়৷
সোনা হল একটি এমন ধাতু যা সাত্ত্বিক এবং চৈতন্য (স্বর্গীয় চেতনা)সমৃদ্ধ তরঙ্গকে শোষণ করে এবং সেগুলিকে বায়ুমণ্ডলে নিক্ষেপ করে৷ তেজ-তত্ত্ব (চূড়ান্ত প্রজ্জ্বলন নীতি)রূপে সোনা চৈতন্য সমৃদ্ধ তরঙ্গকে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়৷ সুতরাং, এটা বিশ্বাস করা হয় যে ব্যক্তি সোনার অলঙ্কার পরে সে সাত্ত্বিক এবং চৈতন্যের উপকারিতা লাভ করবে৷