Published: 28 আগ 2017
পবিত্র সোনার গহনা যা বছরে একবারই দেখা যেতে পারে
পৌরাণিক যুগ থেকে শুরু করে, ভারতীয়দের জীবনে সোনা যেমন প্রভাবশালী তেমনই প্রতীকস্বরূপ৷ ভারত জুড়ে বিভিন্ন মন্দিরগুলিতে দেবী দেবতাদের সোনা অলঙ্কার শতাব্দী ধরে রক্ষিত হচ্ছে৷ এদের মধ্যে অন্যতম বিদিত এবং তারিফ করার মত ভাণ্ডার হল ভগবান আয়াপ্পানের পবিত্র অলঙ্কার যাকে বলা হয় তিরুভাবরনম এবং জনপ্রিয়ভাবে পরিচিত সবরীমালা মন্দির নামে, এটি কেরালায় অবস্থিত একটি হিন্দু তীর্থক্ষেত্র৷
পন্ডলমের রাজা ভগবান আয়াপ্পানের মানবতারকে তার পুত্র হিসাবে দত্তক নিয়েছিলেন এবং তার নাম দিয়েছিলেন মনিকান্তন৷ তিনি তার সবথেকে দক্ষ শিল্পীকে দেবতার জন্য নিখুঁত গহনা ডিজাইন করে তৈরি করার আদেশ দেন৷ তিরুভাবরনম হল তাঁরই পবিত্র গহনার বাক্স, বর্তমানে পন্দলম প্যালেস প্রাঙ্গনের অন্দরে স্রামবিকাল প্রাসাদের সেটি রয়েছে৷
তিরুভাবরনমে অনেক সোনার অলঙ্কার আছে, যার মধ্যে ভগবান আয়াপ্পানের সোনার মুখোশ রয়েছে যা জীবনের রহস্যময় বিশ্বাসের কথা শোনায়৷ অন্যান্য উপকরণের মধ্যে রয়েছে বাঘের ক্ষুদ্র প্রতিরূপ, যেটি দেবতার বাহনের (সওয়ারি/গাড়ি)প্রতিমূর্তি, একই সাথে সোনার হাতি যেটি ভগবান আয়াপ্পানের আরেকটি বাহন৷ সারাপোলি মালা (নেকলেস), ভেলাক্কু মালা (নেকলেস), মনি মালা (নেকলেস), ইরুক্কুম পুমালা (নেকলেস) এবং নবরত্ন আংটি হল দেবতার অন্যান্য পবিত্র অলঙ্কার৷
তিরুভাবরনমের তিনদিনের শোভাযাত্র প্রতি বছরের 12জানুয়ারি নাগাদ হয়৷ এই শোভাযাত্রায়, রাজকীয় পরিবারের দ্বারা নিযুক্ত প্রতিনিধি দেবতার পবিত্র গহনাগুলি একটি পবিত্র বাক্সে করে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এবং নদীর তীর বরাবর 83কিমি পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে বহন করে নিয়ে যান। শোভাযাত্রার তৃতীয় দিন হল মখরা জ্যোতি যখন তিরুভাবরনম সবরিমালা মন্দিরে পৌঁছায়৷ যখন শ্রীকোভিল (দেবালয়) দর্শনের জন্য খুলে যায়, ভক্তরা তখন তিরুভাবরনমে সজ্জিত ভগবান আয়াপ্পানের স্বর্গীয় সৌন্দর্য দেখতে পায়৷ এইভাবে, দেবতার অলঙ্কার বছরের একদিন দর্শনের জন্য উপলব্ধ হয়৷
এই অপূর্ব সুন্দর অলঙ্কারের সাথে অতিরিক্তভাবে, ভগবান আয়াপ্পানের সবররিমালা মন্দির দেবত্বকে অলঙ্কৃত করে সোনা ও মূল্যবান অনুদানও পায়৷ এই মন্দিরের তামার প্রলেপ দেওয়া ছাদের চূড়া সোনার চার ফিলিয়াল দ্বারা আচ্ছাদিত৷ মন্দিরটি পাঠিনেট্টু ত্রিপদিকাল (18টি পবিত্র পদক্ষেদ)-এর জন্য গর্বিত যেটি আদতে মন্দিরের সোনার সিঁড়ি, আগে তৈরি হয়েছিল পঞ্চলোহা (পবিত্র তাৎপর্যের কারণে প্রথাগত পাঁচ-ধাতুর শংকর) দিয়ে৷ এই ধাপগুলিতে কেবলমাত্র ভক্তরা “ইরুমুকককেট্টু” বহন করে আরোহন করতে পারে, যেটি হল পবিত্র কিছু উপাদানের এক বান্ডিল বা এক তাড়া ব্যাগ৷ এই ধরণের প্রাচীন রীতিতে নিষ্ঠা সহ আনুগত্য মন্দিরকে তার পবিত্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে৷