Published: 12 মার্চ 2018
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের 1000 ট্যালেন্ট সোনা!
ভারতের বহিরাক্রমণের ইতিহাসে রাজকুমার অম্ভি অথবা ওমফিস টাক্সলাইস একজন কুখ্যাত নাম৷ সে একজন বিশ্বাসঘাতক হিসাবে চিহ্নিত যবে থেকে সে তার ধনুকের শত্রু রাজা পুরু বা পোরাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আলেকজান্ডারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল৷ রাজা পুরু বর্তমানের পাঞ্জাবে চেনার এবং ঝিলাম (হাইদেসপেস) নদীর মাঝের অঞ্চল শাসন করত৷ অন্যদিকে অম্ভি শাসন করত তক্ষশিলা, তার জমি ঝিলামের উত্তরের তীরের ডান দিক থেকে গান্ধার (বর্তমানে আফগানিস্থানের কাম্দাহার) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল৷ যখন আলেকজান্ডার গান্ধানের প্রাক্তন সত্রপির সর্দার, কিছু পাহাড়ি উপজাতির সর্দার- আসপাসিওই এবং আশভায়ানসের অংশ আসস্কেনোই আমন্ত্রণ করল, এবং আশভকয়ানস (কমবোসাস) আত্মসমর্পন করতে অস্বীকার করল তখন কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল কেবল অম্ভি৷ সে শীর্ঘই মূল্যবান উপহার সমেত আলেকজান্ডারের কাছে আত্মসমর্পন করে৷ যদিও, আলেকজান্ডার অম্ভির উপহার এবং খেতাব ফিরিয়ে দেয় এবং তার বদলে তাকে 30টি ঘোড়া, 1000 ট্যালেন্ট সোনা (25000 – 60,000 কেজি), পার্শিয় আলখাল্লার একটি আলমারি, সোনা ও রূপোর অলঙ্কার দেয়৷
তাহলে এর অর্থ কি অম্ভি আলেকজান্ডারকে বিশ্বের বিজেতা হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছিল নাকি আলেকজান্ডার এই ধরণের মহানুভব মূল্যের বদলে মিত্রতায় সীলমোহর দেওয়ার চেষ্টা করছিল?
ঔপনিবেশিক ইতিহাসবিদরা অম্ভিকে বিশ্বাসঘাতক হিসাবে চিত্রিত করেছেন, সে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল এবং যে সৈন্যদল তাদের নিজস্ব সীমান্ত রক্ষা করছিল তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী দুর্দান্ত মূল্যে সরবরাহ করেছিল৷ যদিও, আলেকজান্ডারের অম্ভিকে উপহার দেওয়ার বিষয়টি তার ক্যাম্পে অতিরিক্ত জুলুম ও হিংসাকে প্ররোচিত করেছিল৷ এটি আলেকজান্ডারকে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে অভিনন্দন জানাতে মেলিগার, তার অফিসারকে তাড়িত করেছিল এবং বলেছিল ভারতে অন্তত একজন ব্যক্তির খুঁজে পাওয়া গেছে 1000 ট্যালেন্টের যোগ্য৷
আসলে, প্রশ্ন হল, যদি অম্ভি পুরুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রতিদানস্বরূপ আলেকজান্ডারের থেকে চায়, তাহলে কি সেটা অম্ভির কাছে আলেকজান্ডারকে পরিশোধ করার জন্য বেশি যুক্তিসম্মত হত না? বিপরীতভাবে বললে, আলেকজান্ডার অম্ভিকে পুরুর বিরুদ্ধে তার সাথে লড়াইয়ের জন্য ঘুষ দিয়েছিল৷ তবে, যদি অম্ভি ঐচ্ছিকভাবে আলেকজান্ডারের দিকে আসত, তাহলে কেন কেউ ইচ্ছাকৃত মিত্রতার (একজন সামান্য রাজা!) জন্য মূল্য দিতে যাবে, তাও আবার এত বেশি পরিমাণ? এটা পুরোটা সন্দেহজনক নয় কি?
পার্শিয়ানদের গাউসামেলার যুদ্ধে হারানোর পরে (খ্রী.পূ.331), মনে করা হয গ্রীকরা 100,000 ট্যালেন্ট (25,00,000 কেজি) সোনা হস্তগত করেছিল৷ যদিও, পুরুর সাথে যুদ্ধে জয়ের পরে, আলেকজান্ডার ভারত থেকে যা লুট করে এবং হস্তগত করে তা নগণ্য৷ এটা খুব আশ্চর্য, সেই সময় ভারতবর্ষ সোনার মত মূল্যবান রত্ন এবং ধাতুতে সন্তরণ করছিল৷ তাই, কিছু ইতিহাসবিদ তর্ক করে যে আলেকজান্ডার না কোন বিবেচনাসাপেক্ষ বিজয় লাভ করেছিল তেমনই প্রচুর পরিমাণ সম্পত্তি সে লুটও করতে পারেনি৷