Published: 01 সেপ্টে 2017
পৃথিবীর সমস্ত সোনা এসেছে উল্কা থেকে
চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্যামেরনের আকর্ষণীয় অবতার-এবং তার বেশ আগের চলচ্চিত্র এলিয়েন্স-উভয়য়েরই কাহিনী মূল্যবান ধাতুর অন্বেষণে অন্য গ্রহে পারি দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে৷ প্রাক-কলোম্বিয় যুগের স্থানীয় আমেরিকানরা বিশ্বাস করত যে হলুদ ধাতু সোনা, সূর্য দেবতার ক্ষমতাকে দখল করেছে; তাদের এই বিশ্বাসেরও অধিকার ছিল যে এই উপাদান অন্য বিশ্বের৷ ভূতত্ত্ববিদরা ধাতুর ব্যুৎপত্তি সম্পর্কে চর্চা করে এখন বলেছেন যে বিশ্বের সমস্ত সোনার আমানত এসেছে বহু বছর আগে পৃথিবীতে এক বিশাল উল্কাপাতের পরে৷
ব্রিস্টোল ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন যে পৃথিবীর গঠনের সময়ে যখন আগ্নেয়গিরি এবং গলিত শিলা প্রচুর পরিমাণে পৃথিবীতে ছিল তখন গলিত শিলা তার গঠনের সময় পৃথিবীর কেন্দ্রে জমা হয়েছিল। বেশিরভাগ লোহা এবং ভারি ধাতু পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে কেন্দ্রে ডুবে যায়, সাথে গ্রহের অনেক মূল্যবান ধাতু সঙ্গে নিয়ে যায়৷
ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভূতত্ত্ববিদ মাথিয়াস উইলবোল্ড বিষয়টিকে এক থালা অলিভ অয়েলের মাঝখানে ভিনেগারের ফোঁটা পরার পদ্ধতিটির তুলনা করেছেন৷ এটি ইঙ্গিত করে যে পৃথিবীর উপরিভাগের কিছু পয়েন্টে কোন সোনা থাকতো না যদি না 200 মিলিয়ন বছর আগে উল্কাপাত না হত এবং পৃথিবীর ভবিষ্যত অবিলম্বে পরিবর্তন হত৷
যদিও প্রতি পৃথিবীর 25 মাইল মোটা কঠিন ভাগের মধ্যে প্রতি 1,000 টন অন্যান্য উপাদানে কেবলমাত্র 1.3 গ্রাম সোনা, তবে আমাদের গ্রহের বিন্যাস ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে মান্য মডেলের মধ্যে ফিট হওয়ার জন্য এই সোনা যথেষ্ট৷ BBC নিউজের সাথে একটি ইন্টারভিয়্যুতে উইলবোল্ড বলছেন এই তত্ত্বটি উল্কাবিষয়ক কার্যকলাপ এবং প্যাটার্নের বর্তমান বোঝাপরার সাথে মানানসই, যেটি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় একটি ঝড়ের সময় যেটি হয়েছিল 3.8 মিলিয়ন বছর আগে, সেটি উল্লেখিত হয়েছিল “টার্মিনাল গোলাবর্ষণ (terminal bombardment)” নামে৷
আজ, বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক আমাদের গ্রহে সোনার প্রাচুর্যের ব্যাখ্যার পথ হিসাবে এই তত্ত্বটিকেই মেনেছেন৷ তবে, বৈজ্ঞানিকদের একটি ছোট গোষ্ঠী বৈকল্পিক, বিপরীত তত্ত্ব ধরে চলেন৷ তাদের ব্যাখ্যা হল পৃথিবীর বুকে সমস্ত সোনা বা তার বেশিরভাগ অংশই গ্রহটির বহু প্রাচীনকাল থেকে উপস্থিত ছিল৷
যদিও বেশিরভাগটাই ভিন্ন পরিস্থিতি এবং পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিবাসনের কারণে লোহার সাথে সংকর হয়ে গেছিল, তবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ-মোটামুটি 0.2%- 700 কিমি গভীর ম্যাগমা “সমুদ্র”তে পৃথিবীর বাইরের আবরণের মধ্যে দ্রবীভূত হয়ে যায়৷ এই সোনাই পরবর্তীতে অগ্নুৎপাতের দ্বারা পৃথিবীর বাইরের স্তরে ফিরে আসে এবং সেই সোনাই আমরা এখন খনন করি এবং গহনা হিসাবে ব্যবহার করি৷