Published: 11 আগ 2017
ভারতে সোনা নিষ্কাশণ
সোনা একটি প্রাকৃতিক ধাতু যেটি প্রায় সমস্ত জায়গায় পাওয়া যায়-জলপ্রবাহ, নদী, সমুদ্র , পাথর এবং পৃথিবীর উপরিভাগে। কিন্তু আপনি কি জানেন এই উৎসগুলির থেকেই মানুষ সোনা আহরণ করে জীবনযাপন করে।
সোনা নিষ্কাশণ
সোনা নিষ্কাশণ বা সোনা ফিল্টারিং হল একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি স্থাপনকারী আমানত থেকে সোনা নিষ্কাশন করা হয় (পাললিক প্রক্রিয়ার সময় মাধ্যাকর্ষণ বিচ্ছেদ দ্বারা মূল্যবান খনিজ পদার্থের আহরণ হয়) , যেমন এগুলি নদীতে পাওয়া যায়।
সোনা নদীতে কিভাবে আসে?সোনা ভূমিক্ষয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলের স্রোতের সাথে মেশে যা নদীর গতিপথে থাকা পাথরগুলিকে ভেঙে দেয়। যখন কোন নদী এমন কোন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় যেখানে ছোট সোনার খনি আছে, তখন সোনাও নদীর জলের সাথে মিশে যায়। তখন সোনা নদীর বাঁকে বা নদীর ভাটিতে জমা হতে থাকে। যে পলি মাটি, অনেক সময় নদীর তীরে পাওয়া যায়, সেটিও সোনার আমানত হিসাবে পরিচিত। এমনকি, “স্থাপনকারী (placer)” শব্দটি স্প্যানিশ শব্দ placer থেকে এসেছে যার অর্থ “পলি মাটি”।
কিভাবে সোনা নিষ্কাশণ করা হয়?প্রথমে আপনাকে জলের সঙ্গে বয়ে আসা মাটি এবং বালি সংগ্রহ করতে হবে। তারপর বিশেষভাবে ডিজাইন করা কাঠের ট্রেতে সেটি রাখতে হবে। এই ট্রেগুলি মাটি বিলীন করে, এমনকি বালিও শোধন করে। তখন শুধু ক্ষুদ্র সোনার কণা পরে থাকে। আপনি সমস্ত কণাগুলি একত্রিত করে গলিয়ে নিন। এক্ষেত্রে খাদ থেকে তুলে আনা সোনা বিশুদ্ধ সোনায় পরিণত হয়। তখন আপনি সেই সোনা জহুরির কাছে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
অনুসষঙ্গী: ভারতে কার সবথেকে বেশি সোনা আছে?
ভারতে সোনা নিষ্কাশণ কারা করে?ভারতে, বিভিন্ন সম্প্রদায় এই সোনা নিষ্কাশণ করে, এই সম্প্রদায়গুলি সোনার শিকারীর বৃহত্তর ছাতার আওতায় পরে।
এরমধ্যে একটি হল ছত্তিশগড়ের সোনাঝার সম্প্রদায়। তারা মধ্যভারতের ছত্তিশগড় এবং ওড়িশা দিয়ে বয়ে যাওয়া মহানদী থেকে সোনা ফিল্টার করে। বহু দশক ধরে, সোনাঝার সম্প্রদায়ের মহিলা ও পুরুষরা ঐতিহ্যগতভাবে ভেজা মাটি থেকে সোনা সংগ্রহ ও ফিল্টার করার কাজে নিযুক্ত এবং তারা সরাসরি স্থানীয় স্বর্ণকারদের কাছে সেই সোনা বিক্রি করে।
এই মানুষগুলির জন্য সোনার ফিল্টার করাই রোজগারের মূল উৎস। একদিনের কঠিন পরিশ্রমের পর, সম্প্রদায়টি যে পরিমাণ সোনার কণা সংগ্রহ করে তা হয়তো 4-5টি চালের দানার পরিমাণ, আর যার উপার্জন ফিল্টার করার মাধ্যমে প্রতি দিনে 400 টাকা।
এমনকি গোন্ড ও পাহাড়িকোরয়া উপজাতিও সোনা শোধন করে। তাদের IB নদীর তীরে পাওয়া যেতে পারে। বিলাশপুর, ছত্তিশগড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া সীর খুদ নামক বহুবর্ষজীবী ছোট নদীটি হিমাচলের দাওলা উপজাতির জীবিকানির্বাহ করতে সাহায্য করে। রাগাড়া নদীর ওপর গোয়ায় আগলোতে-তে এমন বালি আছে যা গৌণ সোনায় পরিপূর্ণ। একইভাবে, কেরালার মালাপ্পুরামের চালিয়ার নদীতে যখন লোকেরা সোনা দেখতে পায় তখন সেখানেও স্বর্ণদৌড় শুরু হয়।
এই পদ্ধতিটি আইনসিদ্ধ?সোনা শোধন বেআইনি করার এমন কোন আইন এখনও নেই। যদিও, উদ্যোগী সোনার প্যানাররা সোনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে আইনের সীমা অতিক্রম করে। এর কারণ তারা এমন জমিতে ঢুকে পরে যা অন্যের অধিকৃত। এর ফলে সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ ঘটে। তার সাথে, সোনার ‘মালিকানা’ নিয়ে এক্ষেত্রে আইনি সমস্যা তৈরিও হতে পারে।
অনুষঙ্গী: দাবি না করা সোনায় স্বত্ব লাভ করতে আপনার নির্দেশিকা
এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে মানুষ মাত্রই বেশ উদ্ভাবক, বিশেষত সোনার মত বিশেষ ধাতু সন্ধানের ক্ষেত্রে তো বটেই।