Published: 05 সেপ্টে 2017
সোনার মান্যতার সংক্ষিপ্তসার
অর্থের সূচনাকালে, সোনার কয়েন ছিল মুদ্রার সাধারণ রূপ। এটা মনে করা হত যে অভিপ্রেত অর্থের একটি সহজাত মূল্য আছে। একটি সোনার কয়েনকে দ্বিখণ্ডিত করলে আপনি যেদুটি অর্ধেক টুকরো পাবেন তার প্রতিটিতে আসল মূল্যই আছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ব্যবসায় যত পণ্যের পরিমাণ ও পরিষেবা বাড়তে থাকে, ততই আরও ভালোভাবে দেশের সমৃদ্ধি সংযত এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য কাগজের অর্থের প্রয়োজনীতা বাড়তে থাকে।
সোনার মান্যতা বলতে বোঝায় অর্থের মূল্য ঠিক করা, এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উঠে আসে; সেই সময় বিশ্বের নিজেকে পুনর্গঠনে সাহায্যের জন্য একটি পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। দু’টি বিশ্বযুদ্ধের নাগপাশে প্রবল মন্দার ফলে, বিশ্বকে পুনর্গঠিত করতে বিশ্বের নেতারা 1944 সালে ব্রিট্টন উড চুক্তির ছত্রছায়ায় একত্রিত হয়। এই সিস্টেমটি এক সোনা বিনিময়ের মান্যতা তৈরি করেছিল যেখানে সোনার মূল্য মার্কিন ডলারে ধার্য হয়েছিল। মার্কিন ডলার নির্বাচনের কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দু’টি বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মোটামুটি অক্ষত ছিল এবং সেই সময়ে সেখানে সবথেকে দৃঢ় অর্থনীতি ছিল। অতীতের দৃঢ় ইউরোপীয় দেশগুলির থেকে আলাদা হওয়ায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকাঠামো মেরামতের প্রয়োজন হয়নি বা এমন কোন শহর ঠিক করতে হয়নি যা যুদ্ধের সময় বোমের আঘাতে ধ্বংস হয়েছে। এটি একটি ছিল বৈপ্লবিক পরীক্ষা ছিল যা আগে কখনও হয়নি এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের বাজারে অত্যন্ত শক্তিশালী করে তোলে।
ব্রিট্টন উড চুক্তির ফলস্বরূপ, সোনার দাম এক আউন্সে $35 নির্ধারিত হয়, যা পরবর্তি 25 বছরের জন্য 1970 সাল এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ পর্যন্ত স্থির ছিল। ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণে সোনার মান্যতার পতন হয়, 1971 সালে এটিকে ত্যাগ করা হয়। 2014 সালের পর কোন দেশই আর সোনার মান্যতাকে মেনে চলেনা। অন্য ভাবে বললে, আমরা সেই বিশ্বে বাস করি যেখানে কোন মুদ্রাই সোনার দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত নয়।
তবে এটি দেশ ও সরকারগুলিকে তাদের সোনা রিসার্ভ করা থেকে থামায়নি। 2017 সালের এপ্রিল পর্যন্ত, ভারতবর্ষ 557 টন সোনা রিসার্ভ রেখে বিশ্বের সমস্ত দেশের মধ্যে 10ম বৃহত্তম সোনা রিসার্ভ দেশ হয়ে উঠেছে।