Published: 01 সেপ্টে 2017
শ্রী পুর্ণাত্রয়ীসা মন্দিরের সোনালি প্রবেশদ্বার
প্রাক্তন কোচিন রাজত্বের রাজকীয় আটটি মন্দিরের একটি হল এই বিশিষ্ট প্রাচীন শ্রী পুর্ণাত্রয়ীসা মন্দির৷ মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর প্রতি নিবেদিত, আর বিশ্বাস করা হয় কেরালার রাজধানী কোচির শহরতলী ত্রিপুনিথুরাতে 5,000 বছর ধরে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে৷ ভগবান বিষ্ণু এখানে সানতনগোপাল মূর্তি রূপে খচিত যার অর্থ “শিশুদের ত্রাতা”৷ ভগবান বিষ্ণুর বিশিষ্ট নাম “পুর্ণাত্রয়ীসা” আসলে তিনটি শব্দের মিশ্রণ আর সেগুলি হল পূর্ণ যার অর্থ সম্পূর্ণ, ত্রয়ী-র অর্থ হল তিন এবং ইসা হল জ্ঞানের ঈশ্বর বা ভগবান৷
1920 সালে, এই প্রাচীন মন্দিরটি এক দুর্ঘটনার আগুনে ধ্বংস হয়ে যায়; তারপর কোচি রাজ্যের রাজা কাঠের ব্যবহার কম করে এবং ধাতু দিয়ে পুনরায় এটি নির্মাণের আদেশ দেন৷ বিশিষ্ট স্থপতি স্বর্গীয় শ্রী ইয়াচারা ওয়ারিয়র এই পবিত্র মন্দিরটির পুনরায় নকশা করার কাজটির দায়িত্ব পান৷ শ্রী ওয়ারিয়র, ভগবান বিষ্ণুর স্বর্গীয় আবেশ এবং ভক্তদের আন্তরিক মনোভাবের কথা বিবেচনা করে, ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মন্দিরের অভিজ্ঞতাকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য দক্ষভাবে মন্দিরের কাঠামো তৈরি করে৷ মনে করা হয় এই বাস্তব মন্দিরটি ভগবানের নিজের রাজ্য কেরালার নিজের ধাঁচের প্রথম মন্দির৷
মন্দিরটির বর্তমান বলিষ্ঠ কাঠামোটিতে রয়েছে দু’তলার গোপুরাম (স্মারক মিনার)৷ দেবালয়ের প্রবেশদ্বার নিখুঁতভাবে বিশিষ্ট শিল্পীদের সাহায্যে সোনার পাত দ্বারা আচ্ছাদিত৷ মন্দির নির্মাণে সোনার ব্যবহার তৎকালীন কোচিন রাজত্বের রাজ পরিবারের স্মৃতিচারণ করে৷
বিস্ময়কর এবং প্রথাগত স্থাপত্যের সাথে অতিরিক্তভাবে, মন্দিরটি বিভিন্ন উৎসবের চমকপ্রদ উদযাপনের জন্যও জনপ্রিয়৷ শ্রী পুর্ণাত্রয়ীসা মন্দির মুসারি উৎসভম, ওনবাথানথি উৎসভম, ভৃসচিগোথসাভম, শঙ্কর নারায়ণ ভিলাক্কু, পারা উৎসভম, উথরাম ভিলাক্কুর মত উল্লেখযোগ্য উৎসব স্মরণার্থে উদযাপন করে৷ এই সমস্ত উৎসবের মধ্যে ভৃসচিগোথসাভম বা বৃশ্চিক উলসাভম হল সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ এবং জাঁকজমকপূর্ণ৷ এই আট-দিনের উৎসব মালায়ালম বৃশ্চিগম মাসে উদযাপিত হয়, যেটি নভেম্বর-ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পরে৷ এই উৎসবে, শোভাযাত্রায় প্রতিমূর্তি বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রদ্ধেয় মন্দিরের পাঁচটি হাতি ব্যবহৃত হয়৷ এই হাতিগুলিকে সোনার সজ্জা, ঘন্টা এবং নেকলেস দ্বারা সাজানো হয়৷ এর সাথে, রীতি অনুযায়ী, একটি “সোনার পাত্র” উদ্যত মঞ্চে রাখা হয় যা দাতাদের জন্য সৌভাগ্য নিয়ে আসে৷
মন্দির নির্মাণে এবং তার সাথে বিভিন্ন রূপে সোনার ব্যবহার ইতিহাস জুড়ে হলুদ ধাতুর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে৷ সোনার সাথে যুক্ত প্রথাগত রীতি এবং বিশ্বাস কঠোরভাবে আজকের দিনেও অনুসৃত হচ্ছে আর তা এই হলুদ ধাতুটির প্রতি ভারতের ভালোবাসা ও আবেগকেই আবার তুলে ধরছে৷