Published: 28 আগ 2017
কিভাবে সোনা তার নাম পায়?
স্পেনবাসী হের্নান কোর্টেস, যিনি আজতেক সাম্রাজ্যকে ভূপাতিত করেছিলেন এবং স্পেনের হয়ে 17শ শতাব্দীতে মেক্সিকো জয় করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন “আমরা স্পেনবাসীরা হৃদয়ের এমন এক দুর্বলতার কথা জানি যা শুধুমাত্র সোনা লাঘব করতে পারে”৷ লিও টলস্টয়ের ছিল আরেক দৃষ্টিভঙ্গী: সত্য, সোনার মত, তিনি বলেছিলেন, “এটির বৃদ্ধি দিয়ে এটিকে পাওয়া যায়না, তবে সবদিক থেকে মুছে গেলে তা আর সোনা নয়”৷ বা ফরাসি বিপ্লবের সময়কালীন এক লেখক অ্যান্টোনি দি রিভারোলের কথা ধরা যাক, যিনি বলেছিলেন “সোনা হল সূর্যের মত, যা মোমকে গলিয়ে দেয় কিন্তু মাটিকে শক্ত করে, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্প্রসারিত করে”৷ সোনা কেবলমাত্র মূল্যবান ধাতুই নয়, এটি জীবনের রূপক৷
যা আমাদের এক প্রশ্নের সম্মুখে দাঁড় করায়: কোথা থেকে এই ধাতুর নামকরণ হয়েছে, যা মূল্যবানের থেকেও অতিরিক্ত কিছু? প্রায় প্রতিটি সংস্কৃতিতেই সোনা সম্পর্কিত কিছু অভিজ্ঞতা আছে এবং এই মূল্যবান ধাতুটির জন্য অনেক ধরণের নামও আছে৷ “গোল্ড” (সোনা) শব্দটি যেরকম আমরা জানি এবং আজকের দিনে ব্যবহৃত হয়, তা আসলে প্রাচীন ইংরাজি এবং জার্মানীয় ব্যুৎপত্তি থেকে উদ্ভুত হয়েছে৷
জার্মান গথিক ভাষা সোনাকে প্রকাশ করত gulþa শব্দটির মাধ্যমে যা পরবর্তীতে প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় উদ্ভুত হয় geolu হিসাবে৷ Geolu শব্দটির অনুদিত রূপ হল “হলুদ”, এইভাবেই সবথেকে নিয়ন্ত্রক বৈশিষ্ট্য সোনালী হলুদ রঙের ফলেই ধাতুটির নামকরণ হয়েছে৷ দ্বাদশ শতাব্দীতে, মধ্য ইংরেজি ভাষার শব্দে আরেকটি বিবর্তন আসে এবং আমাদের আধুনিক শব্দ গোল্ড (সোনা)-এর অস্তিত্ব উদ্ভুত হয়৷
উপাদানের পর্যায় সারণিতে গোল্ডের (সোনা) রাসায়নিক চিহ্ন হল ‘Au’৷ এই চিহ্নটি লাতিন শব্দ aurum থেকে এসেছে, যার অর্থ “প্রখর উজ্জ্বলতা”; এটি প্রাচীন রোমে সোনাকে ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হত৷ প্রাচীন রোমানরা সেই প্রথম সভ্যতা নয় যারা সোনার সম্মুখিন হয় কিন্তু তারা সোনা খননের পদ্ধতি উন্নত করার ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছিল এবং তা সম্প্রসারিত করেছিল, এইভাবে তাদের সাম্রাজ্য জুড়ে সোনার উপলব্ধতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ প্রাচীন রোমানদের দ্বারা আবিষ্কৃত অনেক উন্নত পদ্ধতিই সময়ের পরীক্ষায় টিকে ছিল এবং এখনও সোনা খননের ক্ষেত্রে তা ব্যবহৃত হয়৷
তবে সমস্ত নামের মধ্যে, গোল্ড বা সোনার মত ভালো নাম আর কোনটাই নয়৷