Published: 12 সেপ্টে 2017
প্রাচীন কালে পুরুষরা কিভাবে সোনা ধারণ করতেন?
প্রাচীন কাল থেকে, পুরুষদের সাথে সাথে মহিলারা নিজেদের বিভিন্ন অলঙ্কারে সজ্জিত করে। মহিলাদের সোনার প্রতি এক বিশেষ অনুরাগ আছে; তাদের অলঙ্কার যেমন লক্ষ্যণীয় তেমনই বিস্তৃত পরিসরে দেশ জুড়ে উপলব্ধ। যদিও, পুরুষদের গহনা তুলনামূলক কম প্রচলিত, তবুও তার একটি নিজস্ব আকর্ষণ আছে।
এই প্রবন্ধে সেই সমস্ত সূক্ষ্ম সোনার গহনার ডিজাইন নিয়ে কথা বলা হবে যা প্রাচীনকালে পুরুষদের জন্য তৈরি হত, এগুলি ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং পৌরুষ প্রদর্শন করত।
উজ্জ্বল সারপ্যাচসারপ্যাচ মূলত পুরুষদের অলঙ্কার হিসাবে তৈরি হত। এটি ছিল একটি পাগড়ির অলঙ্কার যেটির মধ্যে ঝুঁটির মত উজ্জ্বল রঙিন পালকের সাথে থাকত সম্প্রসারিত ঝুলন্ত পান্না।
-- এটিতে অনন্য ফ্যাশানে জয়পুরের মীনাকরী কাজ প্রদর্শিত হয়। প্রাচীন কালে সোনার সারপ্যাচের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল।
অর্থবহ শিনকাএক সারি ভারি সোনার চেন দ্বারা যুক্ত থাকা এই শিনকা বিশেষত প্রাচীন ভারতের রাজা এবং মুঘল সম্রাটরা পরত। সারপ্যাচের মতই শিনকা পাগড়িতে সজ্জিত হত, যদিও এটির আরও বেশি আকর্ষণীয় এবং মনমুগ্ধকর ছিল। এই অলঙ্কারটি সোনা দিতে তৈরি হত এবং চেন দিয়ে সাজানো হত। প্রান্তগুলি ছোট সোনার ঘন্টা দিয়ে ঢাকা থাকত যা একটি রাজকীয় এবং ধর্মীয় আবেশ তৈরি করত।
অপরাজেয় কাড়াকাড়া হল এক ধরণের বালা। কাড়ার ভিতরের দিকটিতে রঙিন ফুলের ডিজাইনে মীনাকরী কাজ করা থাকে। এই অলঙ্কারটিতে নাটকীয় ডিজাইন বা প্যাটার্ন থাকে যেমন আন্তঃজড়িত হাতির শুঁড়, ময়ূর বা কুমীর।
অভিলাষী ভাঙ্কিযে গহনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে পুরুষরা পরত তার তালিকাটিতে ভাঙ্কির নাম না করলে সেটি অপূর্ণই থেকে যাবে, এটে বাজু-বন্দ (অনন্ত) হিসাবেও পরিচিত। ভাঙ্কিগুলি তাদের উল্টো V-আকৃতির জন্য পরিচিত। একটি পদ্ম ফুলের নকশার আদলে পেনডেন্টের উভয় পার্শ্ব থেকেই সোনার কাজ দেখা যায়।
এই অলঙ্কারগুলির সাথে, রাজারা এবং অন্যান্য রাজকীয় ব্যক্তিত্বরা ফিরাঙ্গি (তলোয়ার), কাটার (ছুরিকা), খঞ্জর এবং ঢালের মত অস্ত্র ব্যবহার করে তাদের সমৃদ্ধি প্রদর্শন করত। এই অস্ত্রগুলির হাতল প্রায়ই সোনা দ্বারা আবৃত থাকত। এই অস্ত্রগুলি তাদের পোশাকের বেল্ট বা কটি-বন্দের সাথে আটকানো থাকত, যার ফলে হাতল এবং খাপটি বিশেষরূপে দৃশ্যমান হত।
আকর্ষণীয় সোনার অলঙ্কার এক রাজকীয় এবং মনমুগ্ধকর আবেশ তৈরি করত যার ফলে সেটির পরিধানকর্তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসত। প্রাচীন অনন্য পুরুষদের গহনার মাধ্যমে যে কেউ সহজেই সমৃদ্ধশীল মার্জিত ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পরিচয় পেতে পারে।