Published: 17 আগ 2017
ধারণ না করে কিভাবে সোনায় বিনিয়োগ করা যায়
আজ, সমস্ত শারীরিক উপস্থিতিরই উদ্বাবনী বিকল্প সৃষ্টি হয়েছে৷ নতুন ভাষা শেখা, আপনার পরবর্তি দারুণ পোশাকটি কেনা, হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও সহকর্মী বা বন্ধুদের সাথে কথা বলা-সবকিছুই হয়ে যায় শুধু একটা ক্লিকে, এমনকি তার জন্য আপনাকে আপনার বাড়ির আরামটা ছেড়েও যেতে হয়না৷ আর যখন সেটা আর্থিক বিষয় হয়, তখন আমরা বাস্তবিক সম্পত্তি ধারণ না করেও বিনিয়োগে ক্রয় করতে পারি৷
উদাহরণস্বরূপ মিউচুয়াল ফান্ড ধরা যাক৷ আপনি আপনার হাজার হাজার সম্পত্তি একটি ফান্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগ করছেন৷ কিন্তু মালিকানা স্বরূপ পাচ্ছেন শুধুমাত্র একটা ‘বৈদ্যুতিক রসিদ’৷ একই ঘটনা ঘটে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগে৷ আপনি শেয়ার কেনেন কিন্তু বাস্তবে সেই সার্টিফিকেট পান কদাচিৎ৷
একইভাবে, আপনি নিজে গিয়ে বাস্তবে সোনা কিনে সেটা নিজে না জমিয়ে রেখেও সোনায় বিনিয়োগ করতে পারেন৷
সোনা না কিনে তাতে বিনিয়োগ:সোনা কেনার জন্য, আপনি জহুরি বা ব্যাঙ্কের কাছে যান৷ আপনি সোনা ওজন করেন, গুণমান দেখেন, হলমার্ক দেখেন আর দেখেন ক্যারেটেজ, এবং তারপর তার জন্য টাকা দেন৷ এই ধরণের ক্ষেত্রে, আপনি যে সোনা কেনেন তার মূল্য অন্ততপক্ষে কয়েক হাজার টাকা৷ সর্বোপরি, 1গ্রামের সবথেকে হালকা একটা সোনার কয়েনেরও দাম প্রায় 3,000 টাকা ৷ সোনার গহনার তো সে দিক থেকে আরও অনেক বেশি দাম হবে৷
কিন্তু সোনা কেনার সময় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনার অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত:
সুরক্ষা: সোনা একটি ঈপ্সিত মূল্যবান ধাতু৷ তাই, সোনার গহনা বা কয়েন কেনার সময় সুরক্ষা উচ্চ অগ্রাধিকার পায়৷
সোনার দাম নির্ধারণ: ধরুন, আপনি এমন একটি সোনার টুকরো ধারণ করেন যার ওজন 30 গ্রাম৷ এটির মূল্য 90,000টাকা৷ আপনি মেকিং চার্জ বাবদ আরও অতিরিক্ত 1,000 টাকা দিলেন৷ কোন বিশেষ কারণে আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন সোনার গহনাটি বিক্রি করবেন৷ যদিও আপনি শেষমেশ পেলেন 90,000 টাকা, মেকিং চার্জের টাকাটা লোকসান হল৷ উপরন্তু, অল্প টাকার জন্য আপনার গহনার কিছুটা অংশ বিক্রি করা সমস্যাবহুল৷ তার বদলে, আপনি সোনা বন্দক রাখতে পারেন৷ এক্ষেত্রে, আপনি আবার সোনাটি কিনতে চাইলে তা বিক্রি করা দামের থেকে আলাদা হতে পারে৷
অনুষঙ্গী: সোনা বিক্রির আগে 5টি জিনিস জেনে রাখুন
বিশুদ্ধতা:: যখন আপনি সোনা কিনবেন, তখন অবশ্যই প্রত্যায়িত BIS হলমার্কের 4টি চিহ্ন অবশ্যই দেখে নেবেন৷ এটি নিশ্চিত করে যে গুণমানের সোনা আপনি কিনেছেন যেটি যাচাই করা আছে৷ নয়তো সোনার সাথে অন্য কমদামী ধাতু বা সঙ্কর ধাতু মিশিয়ে দেওয়া সহজ হয়৷ এতে আপনার সোনায় বিনিয়োগে মূল্য কমে যায়৷ যাইহোক, হলমার্ক, নিশ্চিত করে যে সোনাটি পরীক্ষিত এবং প্রত্যায়িত৷
উপরোক্ত বিষয়গুলি বিবেচনা না করে সোনায় বিনিয়োগ করলে কি হবে?
নিম্নলিখিত বিকল্পগুলির মাধ্যমে, বাস্তবে সোনা না কিনেও আপনি সোনায় বিনিয়োগ করতে পারেন:
- গোল্ড ফান্ডস এবং এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডস (ETFs)
- গোল্ড ডেরিভেটিভস
- ই-গোল্ড
- গোল্ড রসিদ
ধরা যাক আপনি এবং আপনার বন্ধু এক জহুরির কাছে গিয়ে 5গ্রাম ওজনের একটি করে সোনার কয়েন কিনলেন৷ আপনি, এবার, একমাসের জন্য অন্য শহরে ভ্রমণে চলে গেলেন৷ তাই, আপনি আপনার বন্ধুকে অনুরোধ করলেন আপনার সোনার কয়েনটিও যেন সে জমা রাখে৷ কিন্তু এর অর্থ এই নয় আপনার বন্ধু সেটার মালিক হয়ে গেল৷ আপনার কাছে রসিদ আছে, আর তাতে মালিক হিসাবে আপনারই নাম আছে৷ তাই, আপনি যখন ভ্রমণ করছেন, তখন আপনার কাছে মালিকা হিসাবে শুধু এক টুকরো কাগজ আছে৷ কিন্তু বাস্তবে আপনার কাছে সোনাটি কিন্তু নেই৷
অনেক সময় এমনটাই ঘটে যখন আপনি এমন পণ্যে বিনিয়োগ করেন যা সোনা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়৷ কোন গোল্ড ফান্ড বা এক্সচেঞ্জ-ট্রেডে় ফান্ড (ETF) আপনার মত হাজারও বিনিয়োগকারীর থেকে অর্থ নিয়ে নেয়৷ তারপর তারা আপনার তরফ থেকে লাখ লাখ সোনা কেনে৷ কত টাকা আপনি বিনিয়োগ করেছেন তার ওপর নির্ভর করে, আপনি ততটা বরাদ্দ বিনিয়োগ সরঞ্জামের ইউনিট পাবেন৷ প্রতিটি পণ্যের ইউনিট সোনার ইউনিটের তথা গ্রামে সমান৷ আপনার ধারণ করা প্রতিটি ETF ইউনিট ‘সোনা দ্বারা প্রতিস্থাপিত’৷ তাই, যখন আপনার কাছে বাস্তবে সোনা থাকেনা, সেটা তখন আপনার তরফ থেকে ফান্ডের ঘরে জমা হতে থাকে৷
এমনকি আপনার বিনিয়োগের মূল্যও সোনার সাথে যুক্ত থাকে৷ তাই, যতবার সোনার মূল্য বৃদ্ধি পায়, ততবার আপনার গোল্ড ফান্ড বা ETF হোল্ডিংগুলির মূল্য বেড়ে যায়৷ এইভাবে, সোনা বাস্তবে নিজের কাছে না রেখেও আপনি সোনার সুবিধাগুলি পেতে পারেন৷
অনুষঙ্গী: কিভাবে সোনা মূল্য নির্ধারণ করে?
আসল কথা হলসোনায় বিনিয়োগের নতুন সমস্ত পন্থা নিয়ে এসেছে এই নতুন বিশ্ব৷ এই সোনা প্রতিস্থাপন বিনিয়োগের বিকল্প আপনার জীবনকে অনেক সহজতর করে তুলতে পারে, এমনকি এক্ষেত্রে সোনার আর্থিক মূল্যের যথাযোগ্য সুবিধাও পাওয়া যাবে৷ এইধরণের বিকল্পে বিনিয়োগের খরচ খুবই কম এবং সাথে সুবিধাজনকও৷