Published: 11 সেপ্টে 2017
সিন্ধু সভ্যতার সোনা
সিন্ধু সভ্যতার নিজস্ব একটা জৌলুস আছে। ঐতিহাসিক এবং অন্যান্য উৎসাহী ব্যক্তিরা সবসময়ই আমাদের প্রাচীনতম পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে জানতে উৎসুক; তারা কিভাবে জীবনযাপন করত, তারা কি খেত এবং তারা কি পরিধান করত ইত্যাদি। সৌভাগ্যবশত, প্রত্নতত্ত্ববিদদের সাহায্যে, এই সমস্ত প্রশ্নের কিছু উত্তর খুঁজে পাওয়া গেছে সর্বকালীন সময়ের অন্যতম বড় সভ্যতার কাছ থেকে-আর সেটি হল সিন্ধু সভ্যতা।
এই সভ্যতার খননের থেকে আমরা কেবলমাত্র আমাদের মূল সম্পর্কেই জানতে পারিনা, সাথে এটাও জানতে পারি কিভাবে শতাব্দি ধরে আমরা মানবজাতি গহনার প্রতি অনুরক্ত। খননের ফলে গহনা যেমন আবিষ্কার হয় তেমনই বিভিন্ন ধরণের গহনা পরিহিত স্থাপত্যও আবিষ্কৃত হয়। এই খননকালে বিশেষ করে সোনার গহনার আকর্ষণীয় নির্বাচন দেখা যায়।
সোনা দিয়ে তৈরি গহনাগুলি দেখে বোঝা যায় হলুদ ধাতুর প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং সিন্ধু সভ্যতার বাসিন্ধার জীবনযাত্রায় তার গুরুত্ব।
খননকালে পাওয়া কিছু সোনার আইটেমের মধ্যে আছে:মাথার অলঙ্কার
কোণাকৃতি মাথার অলঙ্কার সোনা দিয়ে তৈরি হয়, এগুলি হরপ্পায় আবিষ্কৃত হয়েছিল।
নেকলেসসিন্ধু সভ্যতা থেকে খনন করে পাওয়া যায় সোনার নেকলেস। যেহেতু মনে করা হয় সিন্ধু সভ্যতার পুরুষরাও গহনা পরত সেই কারণ সম্ভবত এগুলি মহিলা ও পুরুষ উভয়ই পরত।
আংটিবিভিন্ন সোনার আংটি খননকালে গহনার অংশ হিসাবে সিন্ধু সভ্যতা থেকে পাওয়া যায়, যার সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস সেগুলি সিন্ধু সভ্যতার মহিলাদের হাতে শোভা পেত।
পেনডেন্টএকটি সোনার পেনডেন্ট সেটও খনন করা গহনায় পাওয়া যায়। এটি কিসের সাথে পরা হত সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নয়।
মাদুলিবিশেষজ্ঞদের মতে খননের জিনিষগুলির মধ্যে, একটি মাদুলিও আছে যা হয়তো অশুভ শক্তিকে প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা হত। এই অলঙ্কারটি মোমের আকৃতির ছিল এবং দেখে গলার পরার অলঙ্কার মনে হয়।
অন্যান্য আরও গহনাকিছু সোনার টুকরো আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল, বিশেষজ্ঞদের মতে সেগুলি ঘর সাজানোর অংশ ছিল। অতিরিক্তভাবে, পুরুষ ও মহিলার চিত্র খোদাই করা অনেক মূর্তি এবং স্থাপত্য পাওয়া যায় যাদের গলায়, কানে এবং হাতে গহনা ছিল।
এই গহনাগুলির বেশিরভাগই প্রদর্শনের জন্য অলমকারায় রয়েছে- নয়া দিল্লির জাতীয় জাদুঘরের গহনা গ্যালারি তথা হরপ্পা গ্যালারি। এখানে স্থাপত্য এবং খননকালে উঠে আসা অন্যান্য আইটেমগুলিও প্রদর্শনের জন্য রয়েছে। খনন কার্য প্রমাণ করেছে যে আজ আমাদের সোনার গহনার প্রতি আসক্তি শুরু হয়েছিল পূর্বপুরুষের মূল সেই সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে।