Published: 10 সেপ্টে 2018
সোনা খননের ভবিষ্যত
ভারতীয় খনিজ ফেডারেশন (Indian Mineral Federation) অনুযায়ী, কেবলমাত্র ভারতের 575,000 বর্গ কিমি সম্ভাব্য খনিজ পদার্থ সমন্বিত জমির 13% বিস্তারিতভাবে অনুসন্ধান করা হয়েছে৷ এর অর্থ হল ভারতে সোনার খননকার্যের একাধিক অব্যবহৃত সুযোগ রয়েছে৷ যদিও, প্রযৌক্তিক উন্নয়নের গতি এবং পরিবেশগত ক্ষয় আগের থেকে বেশি৷ ফলত, আগামী বছরগুলিতে সোনার খননকার্যের আরও নবীন এবং মজবুত পদ্ধতিগুলির সাথে আমাদের পরিচয় হবে৷
এখানে আগামী তিন দশকে সোনার খননকার্যের মূল্যায়ণ সম্বন্ধে অভিজ্ঞদের কিছু পূর্বানুমান দেওয়া হল:
-
ভূগর্ভস্থ খননকার্যে নজর
গ্রাসাচ্ছাদনের কৃষিকার্যের বদলে খননের জন্য বিস্তর পরিমাণ জমির ব্যবহার স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি এবং সরকারের কাছে মুক্ত-পিট খননের জন্য ঔদাসীন্য তৈরি করতে পারে৷ এর ফলে ক্রমশ ভাবনা ভূগর্ভস্থ খননকার্যের দিকে সরে যেতে পারে৷
-
প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত ক্ষতিকর রাসায়নিক নিষ্কর্ষণ
খননকার্যের সময় সায়ানাইড এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিপজ্জনক রাসায়নিকগুলির ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবনার বিষয়৷ স্বর্ণ শিল্পে ডিসায়ানাইডকরণ দ্রুত ঘটার সম্ভাবনাটা বেশ রয়েছে৷ খননের জন্য ভূগর্ভে বিস্ফোরণের ব্যবহার যান্ত্রিক কর্তন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে৷ এর ফলে খনি থেকে আরও ঘনীভূত সোনা পাওয়া যাবে৷
-
উন্নত যান্ত্রিক কর্তন
বেশিরভাগ খনিগুলিই আজকাল যান্ত্রিক কর্তন পদ্ধতি অনুসরণ করে৷ এর কারণ এটি বিস্ফোরণ প্রক্রিয়ার থেকে বেশি সংহত৷ যদিও, যান্ত্রিক ডিভাইসগুলি অত্যন্ত কঠিন পাথরগুলির ক্ষেত্রে সীমিত সাফল্যই পেয়েছে৷ প্রযৌক্তিক উন্নতির সাথে, অবশ্য পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে৷ যান্ত্রিক কর্তন ভবিষ্যতে নিয়ম হতে চলেছে এবং মোবাইল প্রসেসিং ব্যবহার করে যন্ত্রের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণ করলে প্ল্যান্টগুলি আরও বেশি কার্যকর হয়ে উঠবে৷
-
মজবুত সমুদ্র-ভিত্তিক প্রকল্প
যেহেতু সোনা প্রায় সমগ্র বিশ্ব জুড়ে সর্বত্র বণ্টন করা হয় এবং বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ পৃষ্ঠতল সমুদ্রে নিমজ্জিত, তাই পরিসংখ্যানগতভাবে সমুদ্রের তলায় সোনার খোঁজ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ ফলত, ভবিষ্যতে সমুদ্র থেকে সোনা নিষ্কাশনের জন্য মাইনিং কোম্পানিগুলির আরও সমুদ্র-ভিত্তিক প্রকল্প তৈরির সম্ভাবনা আছে৷ অবশ্যই, এক্ষেত্রে ড্রিলের কৌশল এবং সেন্সর প্রযুক্তির উন্নয়ন আবশ্যক এবং এই আমানতগুলির সঠিন অবস্থান জানার জন্য বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং মেশিন লার্নিং ব্যবহার করতে হবে৷ তবে আগামী 30 বছরে, এটি আবশ্যিকভাবে সম্ভব৷
-
স্বংয়ক্রিয়তাকে আলিঙ্গন
জমি হোক বা সমুদ্র, স্বয়ংক্রিয়তা খনন বা মাইনিং শিল্পের মূল বৈশিষ্ট হতে চলেছে স্বয়ংক্রিয়তা যেটি বিপজ্জনক এবং অপ্রয়োজনীয় হস্তকৃত কার্যকলাপকে প্রতিস্থাপন করবে৷ মানুষ তখন মেশিন বা রোবট রক্ষণাবেক্ষণ ও চালনার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল, সুকৌশলী এবং কর্মপ্রণালী নির্ভর কাজের ওপর নজর দেবে৷
-
পুনর্নবীকরণ শক্তির ব্যবহারের সুবিধা
স্বর্ণ খনন শিল্পের জন্য শক্তি দ্রুত একটি সমস্যা হয়ে উঠছে৷ মাইনিং কোম্পানিগুলি জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার হ্রাস এবং পুনর্নবীকরণ এবং ব্যাটারীর-পাওয়ার দেওয় শক্তির উৎস বৃদ্ধির দিকে তাকিয়ে আছে৷ ডিজেলের তুলনায় সৌরশক্তি অনেক সস্তা এবং সাম্প্রতিক সৌর প্যানেলগুলি একই সময় 14 ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারে বলে, প্রথাগত শক্তিবর্ধক উৎসের একটি দারুণ বিকল্প হয়ে উঠেছে৷
-
দীর্ঘস্থায়ীত্বে উৎসাহ
নতুন সোনার খনিগুলি আবিষ্কারের ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি সবথেকে বেশি অস্বস্তি বোধ করে৷ এই ধারণা চলে আসার কারণ এক্ষেত্রে অসংখ্য অদক্ষ এবং সামান্য দক্ষতা সম্পন্ন চাকরির সম্ভাবনা কমে যায়৷ যদিও, সময়ের সাথে প্রযুক্তি সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক বেশি স্থায়ী পরিবর্তন আনতে পারবে৷ যখন খনি-ভিত্তিক চাকরি তৈরি থেকে নজর সম্পদ তৈরির দিকে যাবে আর তা শিক্ষা, আর্থিক অবস্থা এবং এন্টারপ্রাইজ জুড়ে নির্মিত হবে৷ সাধারণত, সোনা আবিষ্কার হওয়া থেকে সেটির বাণিজ্যিক উৎপাদন হওয়ার মাঝে দশ-বছরের ব্যবধান থাকে৷ এই সময়টা শিক্ষার উন্নতিতে, সংযোগে উন্নত করতে এবং এন্টারপ্রাইজকে উৎসাহদানে ব্যবহার করা যেতে পারে৷
আগামী 30 বছরে, সোনার খননকার্যের পরিবেশগত, সামাজিক এবং সরকারি প্রয়োজন দ্বারা চালিত গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ যদি বিবেচনার সাথে বাস্তবায়ন করা হয়, এই পরিবর্তনগুলি সম্ভবত সমস্ত সম্প্রদায়ের জন্যই লাভজনক হবে৷