Published: 11 সেপ্টে 2017
মুম্বাইয়ের সমৃদ্ধশালী মন্দির-শ্রী সিদ্ধিবিনায়ক
মুম্বাইতে, এখানে ভগবান গণেশের প্রতি ভালোবাসা এতোটাই বেশি যে, যদি আপনি “গনপতি বাপ্পা” বলে চিৎকরা করেন তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে শুনতে পাবেন “মোরিয়া” (কোরাসে)৷
মুম্বাইয়ের সমস্ত পবিত্র স্থানগুলির মধ্যে শ্রী সিদ্ধিভিনায়ক মন্দির হল সবথেকে জনপ্রিয় এবং প্রায়সই পরিদর্শনের মন্দির৷ এই মন্দিরটি ভগবান গণেশের প্রতি নিবেদিত এবং 1801 সালে এক নিঃসন্তান ব্যক্তি দেউবাই পাটিল দ্বারা নির্মিত৷ দেউবাই এই মন্দিরটি সেই মহিলাদের জন্য বানিয়েছিলেন যারা সন্তান লাভে অক্ষম, ভগবান গণেশের কাছে তাদের প্রার্থনা জানানোর একটি স্থান করে দিয়েছিলেন তিনি৷
বলিউডের অভিনেতা, রাজনৈতিক নেতা এবং অন্যান্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই শ্রী সিদ্ধিভিনায়ক মন্দিরে যান৷ এর জনপ্রিয়তার কারণে, প্রার্থনার এই পবিত্র স্থানটি মুম্বাইয়ের একটি অন্যতম প্রহরারত স্থান হয়ে উঠেছে৷ বছরের পর বছর ধরে মন্দিরটি বেড়ে চলেছে এবং বর্তমানে মুম্বাইয়ের সর্বাধিক ধনী ও সবথেকে জনপ্রিয় মন্দির৷
প্রার্থনা করার জন্য শ্রী সিদ্ধিবিনায়কের সূচনাকালের ছোট্ট স্থানটি 1993 সালে জমকালো মন্দিরে পরিবর্তিত হয়৷ এই অসাধারণ রূপান্তরে, মম্দিরের স্থপতি স্থাপত্যের প্রাচীন শৈলিই অনুসরণ করেছিলেন৷ মন্দিরের নির্মাণে সোনার ব্যবহারই এর সমৃদ্ধির প্রমাণ দেয়৷
শ্রী সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরটিতে বর্তমানে রয়েছে গোল্ড প্লেটেড কলস (গম্বুজ) সমেত একটি বহু-কৌণিক কাঠামো৷ কেন্দ্রীয় প্রধান কলসটি মন্দিরের চূড়ায় গণেশের প্রতিমূর্তির ওপরে অবস্থিত৷ এই 1500 কেজির কলসটি সোনার প্রলেপ দেওয়া এবং সেটি ভক্তদের দূর থেকে ভগবান গণেশের আশিষ লাভের অনুমতি দেয়, বিশেষত ব্যস্ত মুম্বাইয়ের ভিড়ের সময়৷ মন্দিরের অন্যান্য কলসগুলিতেও সোনার প্রলেপ দেওয়া আছে, দেবালয়ের ভিতরের দিকের শীর্ষে অষ্টকোণী-আকার সমেত, যেটি সোনা দ্বারা আচ্ছাদিত এবং যেটি গণেশের প্রতিমূর্তির ডানদিকে অবস্থিত৷
অন্যান্য নৈবেদ্যর মধ্যে, মন্দিরটি প্রচুর পরিমাণে সোনার বার ও অলঙ্কার সমেত সোনা পেয়ে থাকে৷ কখনও কখনও, এই হলুদ ধাতুকে নগদে পরিবর্তন করার জন্য, মন্দিরের ট্রাস্ট ভক্তদের দান করা অলঙ্কারের নিলাম করে৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ প্রখ্যাত তারকাদের উপস্থিতিতে মূলত অক্ষয় তৃতীয়, চতুর্থী ইত্যাদির মত শুভ দিনগুলিতে এই নিলাম সেল পরিচালনা করে৷ 2016-17 সালে, মন্দির কর্তৃপক্ষ প্রায় ভারতীয় মুদ্রায় 11 লাখের কাছাকাছি মূল্যের সোনার অলঙ্কার নগদ করে৷
সোনার নিলামের পাশাপাশি, 2016 সালে, শ্রী সিদ্ধিভিনায়ক মন্দির সরকারের সোনা নগদীকরণ স্কিম (Gold Monetisation Scheme, GMS)-এর প্রথম অংশগ্রহণকারী মন্দির হয়ে ওঠে৷ মন্দির কমিটি সাথে 12 ক্যারেট থেকে 24ক্যারেটে পরিসরের প্রায় 50কেজির কাছাকাছি সোনা GMS-এর অধীনে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সাথে জমা দেয়৷ মন্দির এই মাঝারি-টার্মের আমানতে 2.25 শতাংশ সুদ লাভ করেছে যেটি সম্ভবত 12 বছরের সময়সীমায় বৃদ্ধি পাবে৷ ভারত সরকার এই ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে কারণ সরকার এক্ষেত্রে ক্রমাগত মন্দির এবং অন্যান্য পবিত্র স্থানগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণের আর্জি জানিয়ে আসছে৷