Published: 04 সেপ্টে 2017
ঈশ্বরের উপযুক্ত: পৈঠানি শাড়ির ইতিহাস
পৈঠানি শাড়ির গল্প ইতিহাসের গভীরে প্রথিত। 2000-বছরের উত্তরসূরীর দায় সমেত এই কাহিনী, নিয়ে যায় দক্ষিণী সভ্যতায়- সিল্ক, জরি, চারুতা এবং আড়ম্বরের এক কাহিনী- কাহিনী এক প্রথার। গোদাবরী নদীর তীরে মহারাষ্ট্রে পৈঠানে জন্মে, খ্রি.পূ. 200 অব্দের সত্যহানা রাজবংশের সময় পৈঠানি চর্চিত হতে শুরু করে.
সম্পূর্ণ হস্তশিল্পে বুনন হওয়া এই পৈঠানি একটি ট্যাপেষ্ট্রির আদি রূপ- দামি কাপড়, জমকালো রং এবং নিখুঁত ডিজাইনের বুননের সাথে সোনা। মূলত সোনা ও সিল্ক দিয়ে তৈরি হয় এই শাড়ি, পৈঠানি শাড়ি যেকোন স্থানেই তৈরি হতে 18 থেকে 24 মাস সময় নেয় এবং বহু দূর পর্যন্ত এটি সমাদৃত। ইউনেসকোর মত অনুযায়ী, এই অপূর্ব সুন্দর সোনালী বুননের কাপড়টির সৃষ্টিকর্তারা প্রথম এটির ব্যবসা করে রোমানদের সাথে সমান ওজনের সোনার বিনিময়ে।
এমন কি, ভারত সরকাররে বস্ত্র মন্ত্রকের মত অনুযায়ী, সাতবাহন রাজারা শাড়ির ক্ষেত্রে প্রথম বিদেশী ব্যবসার সুবিধা নেয় এবং পশ্চিমী দেশগুলির কাপড়ের পছন্দ জানার জন্য সেখানে একাধিক দূত পাঠায়।
গোদাবরীর সমৃদ্ধশীল উপনদীগুলি পৈঠান খনিজ সম্পদ, উর্বর মাটি এবং বন সম্পদ এনে দিয়েছিল যা পৈঠানি শাড়ির ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক শ্রীবৃদ্ধির অবদান রেখেছিল। 17শ শতাব্দির মুঘল সম্রাট ঔরাঙ্গজেব পৈঠানি শাড়িকে আবার তার গৌরবের জগতে নিয়ে এসেছিল এবং হায়দ্রাবাদের নিজাম এবং সেই সমস্ত মুঘলদের কাছে যারা ফুলের মত কোন নতুন প্রসঙ্গের প্রস্তাব দিয়েছিল তাদের কাছে এই চারুকলাটিকে রাজকীয় রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছিল-এই সুচারু শাড়িগুলি দশকের পর দশক ধরে ভারতীয় প্রভাব, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের আশিষ ধন্য।
মুঘল যুগের পতনের পর, পুনের পেশোয়ারা আরেকবার পৈঠানি শাড়ির শিল্প তাদের ছায়ায় নিয়ে আসে এবং সিরডির কাছে ছোট একটি শহরে শিল্পীদের স্থায়ী ভাবে থাকতে সাহায্য করে। তবে, রাজকীয় পৃষ্টপোষকতার পতনের সাথে, পৈঠানি শিল্পেরও ক্ষয় হয়েছে।
পৈঠানি শাড়ি আজ প্রায় মহারাষ্ট্রের হারিয়ে যাওয়া শিল্পের মধ্যে পরে। তারপর, 2016 সালে, ভারত সরকার এবং মহারাষ্ট্র সরকার একত্রিতভাবে তাঁতিদের সাথে পৈঠানি বয়নের পুনরূজ্জীবনের জন্য কাজ শুরু করে। আজ, রপ্তানি এবং উচ্চ-গুণমান সম্পন্ন পোশাক এই শিল্পকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে।
এ যেন এক ধনভাণ্ডার যা সারা জীবনের জন্য এক ছাপ রেখে যায়- হয়তো তা তার মালিকদের কিছু প্রজন্মের জন্য, তবে ভারতে তা কয়েক শতাব্দির জন্য।