Published: 07 সেপ্টে 2017
কি কারণে ভারতবর্ষ বিশ্বের সবথেকে বড় সোনার গহনা রপ্তানিকারী দেশ হয়ে উঠেছে?
2015 থেকে 2016 সালের মধ্যে, ভারত 8.6 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সোনা রপ্তানি করেছে ৷
2004 সাল থেকে, সোনা এবং গহনা শিল্প বিদেশী মুদ্রায় US$369bn (Rs19,024bn)-র বেশি উপার্জন করে৷ আর এটি সম্ভবত একত্রিত বার্ষিক বৃদ্ধির হার 5%–7% বাড়িয়ে তুলবে পরবর্তি 10বছরে ৷
মজার বিষয় হল, যদিও 2015 সালে, 2টনের কম সোনা ভারতে খনন করা হয় এবং সোনার চাহিদা পূরণের জন্য 950 টনের বেশি সোনা আমদানি করা হয় ৷ তাহলে, ঠিক কি কারণে ভারত বিশ্বের সেরা সোনার গহনা রপ্তানিকারী দেশ হয় উঠল?
সোনা আমদানিকারী2015-2016 সালে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, হংকং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সিঙ্গাপুর সহ 90টি দেশে সোনার গহনা রপ্তানি করা হয়৷ যে সমস্ত দেশে ভারতীয় জনসংখ্যা বেশি সেখানেই মূলত ভারতীয় সোনার গহনার চাহিদা বেশি৷ ভারতীয় গহনার 50% রপ্তানি করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে, যেটি 2.6 মিলিয়নের বেশি দেশত্যাগী ভারতীয়দের ঘর হয়ে উঠেছে- ভারতীয়রা সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সবথেকে বড় নির্বাসিত সম্প্রদায় ৷
সোনার ডিজাইন
যে সামগ্রিক পরিমাণ সোনার গহনা ভারত রপ্তানি করে, তার মধ্যে 50%ই কারুকার্যহীন সোনার গহনা হয়৷ সাধারণত, মুম্বাই, কোলকাতার মত শহর এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু শহর এই সোনার সেট ও চেনগুলি রপ্তানি করে৷দক্ষিণ ভারতের, বিশেষত তামিলনাড়ু এনং কেরালা তাদের অনন্য সোনার ডিজাইনের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে পরিচিত৷প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারি, এই সোনার গহনাগুলি সত্যিই মর্মস্পর্শী এবং বিশ্বব্যাপী সমাদৃত৷
ভারতে সোনার ডিজাইনের অনন্যতা এবং বিভিন্নতাই বিশ্বব্যাপী ভারতীয় গহনার চাহিদাকে বাড়িয়ে তুলেছে৷ ভারতের হস্তনির্মিত সোনার গহনার চাহিদা সারা বিশ্বজুড়ে রয়েছে৷ প্রথাগত ভারতীয় সোনার গহনার ডিজাইন এবং শিল্পীর দারুণ-অনুপ্রেরণা জনিত কারিগরিও বিশ্বব্যাপী বহুল প্রচলিত৷ কুন্দন এবং মীনাকারীর মত সোনার গহনার শৈলি মুঘল রাজবংশ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে এবং এগুলির চাহিদাও বাজারে প্রচুর৷
সোনা ব্যবসা
অন্য কোন দেশে যেকোন রূপে সোনা রপ্তানি করার জন্য রাউন্ড ট্রিপিং হল এক ধরণের কার্যকলাপ, এক্ষেত্রে সোনাকে গলানো হয় এবং তারপর রপ্তানি করা দেশে মূল রূপে পুনরায়-নিজরূপে নিয়ে আসা হয়৷ এটি দেশগুলির মধ্যে সোনার একটি বৃত্তাকার প্রবাহ তৈরি করে৷ আর ফলস্বরূপ, এটি ব্যবসার পরিসংখ্যা বৃদ্ধি করে৷
যে দেশগুলি এই ‘রাউন্ড ট্রিপিং’-এর সাথে যুক্ত হয় তাদের সবারই আলাদা কারণ থাকে৷ এক্ষেত্রে, ভারতের কারণ কি? আসলে, ভারত নিয়মানুসারে ব্যবসার মাত্রাকে জোড়দার করার দ্বারা তুলনামূলক সস্তার আর্থিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে রাউন্ড ট্রিপিং ব্যবহার করে৷ ভারতের ব্যবসাকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে কিছু কর্মপন্থা এবং ক্ষেত্রও এটি শুরু করেছিল৷ এদের কয়েকটি দেখে নেওয়া যাক:
-
GJEPC
রত্ন এবং গহনা রপ্তানিকে উৎসাহিত করার জন্য GJEPC নামে পরিচিত দ্য জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশান কাউন্সিল (The Gem & Jewellery Export Promotion Council) 1966 সালে ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ ফলস্বরূপ, 1966-67 সালের রপ্তানি থেকে আয় 28 মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে 2013-14 সালে প্রায় 35 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়৷
-
SEZs
ভারত সরকার 2000 সালে বিদেশী ব্যবসাকে আমন্ত্রণ জানাতে স্পেশাল ইকনমিক জোন (Special Economic Zone,SEZ) শুরু করে৷ সরকার বুঝতে পারে কিভাবে একটি ফলপ্রসূ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (Export Processing Zone,EPZ) তৈরি হতে পারে এবং সেটি করার ক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে ভারতই প্রথম দেশ ছিল৷
-
SEEPZ
1973 সালে SEEPZ (সান্ত্রাক্রুজ ইলেকর্টনিক্স এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন, Santacruz Electronics Export Processing Zone) তৈরি হয়৷ এটি বর্তমানে ভারতের সবথেকে বড় রপ্তানি জোনগুলির একটি৷ আর সোনার গহনার সবথেকে বেশি অংশটি: সমস্ত গহনার 84% (1.8 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এই জোন থেকেই রপ্তানি করা হয়৷
রত্ন ও গহণার ক্ষেত্রের ভবিষ্যত উজ্জ্বল, তা কেবলমাত্র আমদানি এবং রপ্তানি কোম্পানিগুলির ক্ষেত্রেই নয়, শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও৷ AT Kearney-র রিপোর্ট অনুযায়ী রত্ন ও গহনা শিল্পে প্রায় 2.5 মিলিয়নের বেশি শ্রমিক কাজ করে এবং 2020 সালের মধ্যে আরো 0.7–1.5 মিলিয়ন শ্রমিক নিযুক্ত করার ক্ষমতা রাখে ৷ আপনি যদি এই উঠতি শিল্পে কেরিয়ার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে Jewellery design- a dazzling career choice পড়ুন৷