Published: 18 জুন 2018
সোনা, এক মহিলার সম্পদ
একটি ঐতিহাসিক রায়ে, প্রধান বিচারালয় ঘোষণা করে যে একজন মহিলার ‘স্ত্রীধন’-এর প্রতি অপরিবর্তনীয় অধিকার আছে এবং স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে গেলে বা বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও সেগুলি সে দাবি করতে পারে। এই রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এটি স্পষ্ট করে বলছে যে মহিলার স্ত্রীধনের দেওয়া ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টি পারিবারিক নির্যাতনের সমতুল্য, এক্ষেত্রে যে ব্যক্তি এটির জন্য জোড় করে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলি নিশ্চিত।
হিন্দু আইন অনুযায়ী, স্ত্রীধন বলতে সেই দামি জিনিস এবং সামগ্রীকে বোঝায়, যা একজন মহিলা বিবাহের ঠিক আগে এবং পরে স্থাবর বা অস্থাবর উভয় হিসাবে পেয়ে থাকে।
স্ত্রীধনের প্রচলনটি বহুবছর আগে থেকেই চলে আসছে, বলা যায় সেইসময় যখন সম্প্রদায়গুলির শাসন একটি আকার নিতে শুরু করে। এর ভিত্তিতে ছিল একটি সহজ ভাবনা যে মেয়ে যখন বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি চলে যাবে তখন মেয়েকে তার সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হবে। সেই সময়, জমি ছাড়া মেয়েদের সোনা দেওয়া হত যেহেতু এটি মূল্যবান ছিল এবং ভবিষ্যতেও তার মূল্য বজায় থাকত। এই সম্পত্তি কেবলমাত্র তার ব্যবহারের জন্য ছিল-তা সে পরিবারের জন্য কোথাও বিনিয়োগ করুক বা নিজের জন্য সঞ্চয় করুক অথবা তার পরিবারের জন্য খরচ করুক-সেটি সম্পূর্ণ তার নিজের সিদ্ধান্ত।
এটি কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা, যখন শাসন ব্যবস্থা এবং ঐতিহ্য লোভে কালিমালিপ্ত হয়। এমনকি, একজন বিবাহিত মেয়ের সম্পত্তিতে অধিকার রক্ষার আইনও সাম্প্রতিক সংস্করণ মাত্র। এর পূর্বে, ভারতীয় আইনে বলা ছিল মাতা-পিতার সম্পত্তিতে তাদের ছেলের অধিকার আছে এবং স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার আছে একজন মেয়ের। অবশ্য, ‘স্ত্রী-ধন’-এর ঐতিহ্য এই ধারণাকে অকার্যকর করেছিল।
পরিবারের লোকেরা বিয়ের কনেকে যে সোনা উপহার দেয় তা কেবলমাত্র শুভই নয় সাথে সেটি তার জীবনকেও সুরক্ষিত করে। সোনাকে একটি মূল্যবান বিনিয়োগের উপকরণ হিসাবে দেখা হয় যা একটি সুরক্ষিত বিনিয়োগের বিকল্প হিসাবে বিবেচিত। সোনার দাম বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়, যা এটিকে বিয়ের পাত্রীর প্রয়োজনের সময় মূল্যবান করে তোলে।
বাস্তবে, ভারতীয় সংস্কৃতির নিগূঢ় নির্যাস উভয় লিঙ্গেরই গুণমান এবং ঔজ্জ্বল্যকে বাড়িয়ে তোলে। ঐতিহ্যগতভাবে মহিলা ও পুরুষ একইভাবে গণ্য হয়, যেমন হওয়া উচিত।