Published: 30 অক্টো 2018

মহারাষ্ট্রে সোনা পরিধান

History of traditional Maharashtrian gold jewellery and how they are worn now

সোনার গহনা মহারাষ্ট্রীয়দের সংস্কৃতিতে বহু শতাব্দী ধরে অংশ হয়ে রয়েছে। মহারাষ্ট্রের মহিলাদের পোশাকের সাথে মানানসই বেশিরভাগ সোনার গহনার ডিজাইন মারাঠা এবং পেশওয়ারদের গহনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে।

পৈঠানি শাড়ি হোক বা বিন্দি বা লক্ষ্মী হার, যে প্রত্যেকটি উপকরণ বিশুদ্ধ মহারাষ্ট্রীয় মহিলাদের উপস্থিতিতে রাজ্যের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে প্রতীকায়িত করে।

এখানে মহারাষ্ট্রের কিছু ঐতিহ্যবাহী সোনার গহনার ডিজাইন তুলে ধরা হল:

মোহন মালা

সোনার পুঁতির 2-8টি স্তর বিশিষ্ট একটি লম্বা নেকলেস মোহন মালা নামে জনপ্রিয়, এটি বিয়ের এবং প্রাত্যহিক উভয় সময়ের গহনা হিসাবেই পরিধেয়।

কোলহাপুরী সাজ

বিয়ের প্রতীক হিসাবে, বিবাহিত মহারাষ্ট্রীয় মহিলারা কোলহাপুরী সাজ পরে এবং এটি পাত্রপক্ষের পরিবার থেকে উপহার স্বরূপ দেওয়া হয়। এটির নামের সাজুজ্জ মেনেই এটির ডিজাইন কোলহাপুর থেকে উঠে এসেছে। গলার এই হারটি 21টি পেনডেন্ট দিয়ে তৈরি। কেন্দ্রে থাকা প্রধান পেনডেন্টটি ‘সাজ-ঘট’ নামে পরিচিত। কোলাহপুরী সাজ আদতে সাজ-ঘট এবং অন্য সোনার পেনডেন্টগুলির সমারহ মাত্র। এটির মধ্যে 21টি পেনডেন্ট পত্রকের আকৃতিতে স্থাপিত থাকে। এই 21টির মধ্যে, 10টি ভগবান বিষ্ণুর দশাবতারকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং 8টি সুপ্রসন্নতাকে (অষ্টমঙ্গল)প্রতিনিধিত্ব করে, 1টি তাবীজ (অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা করার জন্য) এবং বাকি 2টি চুনি এবং পান্না।

লক্ষ্মী হার

পুটলি হার, কয়েন নেকলেস বা মন্দির নেকলেস নামেও পরিচিত লক্ষ্মী হারে সোনার কয়েনগুলি একসাথে একটি সিল্কের বিনুনি করা সুতো দিয়ে গাঁথা থাকে। কয়েনগুলিকে লক্ষ্মীর প্রতিমূর্তি থাকে, যিনি সম্পদের দেবী হিসাবে পরিচিত। এটি 17শ শতাব্দী থেকে মহারাষ্ট্রীয় মহিলাদের গহনার একটি অখন্ড অংশ হয়ে উঠেছে।

তোড়ে

নিখুঁতভাবে খচিত সোনার বালা তোড়ের ওজন 250-300 গ্রাম। সোনার আংটির সাথে একসাথে সংযুক্ত এই হস্তনির্মিত বালাগুলি তৈরি করতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। আপনি মহারাষ্ট্রীয় বিয়ের কনেদের এই বালাগুলি একগুচ্ছ সবুজ রঙের কাঁচের চুড়ির সাথে পরতে দেখবেন। তোড়ে আরেকটি গহনা যা সাধারণত পাত্রপক্ষের পরিবার উপহারস্বরূপ দিয়ে থাকে।

ভাকি

বাজুবন্দ বা আর্মলেট হিসাবেও পরিচিত ভাকি ঐতিহ্যগতভাবে মহারাষ্ট্রীয় মহিলাদের দু’টি হাতেই পরতে হত কিন্তু এখন একটি হাতেই তারা পরে থাকে। এটি সোনায় তৈরি এবং অপূর্ব সুন্দর কিছু নকশা তাতে থাকে।

অম্বারা বেনী ফুল

একটি 22-ক্যারেটের সোনার পিন প্রায় প্রত্যেক মহারাষ্ট্রীয় বিয়ের কনেরা চুলে সাজায়, এই অম্বারা বেনী ফুল বিভিন্ন নকশায় সজ্জিত থাকে, যার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হল জোয়ারের গুঁড়ো দিয়ে সূর্যমুখীর নকশা।

তুষি

তুষি হল সেই অলংকার যা প্রত্যেক মহারাষ্ট্রীয়কে উজ্জ্বলতম করে তোলে, এটি একটি কণ্ঠহার স্বরূপ নেকলেস যার মধ্যে দড়ির জাল দিয়ে স্তর তৈরি করা বিভিন্ন আকারের সোনার পুঁতি নিখুঁতভাবে বোনা থাকে। এটি নিয়ন্ত্রক দড়ির সাথে পাওয়া যায় যেটি হারটিকে মাপ মত সাজাতে সাহায্য করে। সোনার পুঁতিগুলি সম্পর্কে বিশ্বাস করা হয় যে এগুলি নববধূর নতুন গৃহে সর্বদা সৌভাগ্য এবং পর্যাপ্ত খাদ্যভান্ডারে পরিপূর্ণ রাখবে বলে ইঙ্গিত দেয়।

বিশ্ব জুড়ে অনন্য এবং নিখুঁত ডিজাইনের জন্য স্বীকৃত, সুদক্ষভাবে নির্মিত প্রথাগত মহারাষ্ট্রীয় সোনার গহনা তার রাজ্যের প্রথা, রীতি এবং ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্তভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।