Published: 17 আগ 2017
বিংশ শতকের প্রজন্মের সোনা কেনার পথ
মিলেনিয়াল্স বা বিংশ শতকের প্রজন্ম, হল সেই প্রজন্ম যারা 1980-2000 সালের মাঝে জন্মেছে, এরা সরাসরি টেকনোলজি এবং অর্থনীতির জগতের দ্রুত পরিবর্তনের সাক্ষী৷ তাদের ক্রেতাসুলভ ব্যবহার, প্রত্যাশা, এবং চাহিদা সম্পূর্ণরূপে আগের প্রজন্মের থেকে আলাদা আর তাই অনেক কোম্পানিই তাদের এই ব্যবসার কৌশলকে উদ্বুদ্ধ করছে এবং তা ধরে রাখছে ৷ তাদের ভাবনা এবং পছন্দ যে তাদের মা-বাবার থেকে আলাদা হবে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই।
এটি প্রতিফলিত হয় যেভাবে তারা সোনা কেনে তার মধ্য দিয়েও৷
প্রকাশের রুচিযখন বিষয়টা টাকার, তখন কিন্তু এই প্রজন্ম খরচ বা বিনিয়োগের প্রথাগত উপায়ের মধ্যেই আটকে থাকেনা৷ আজকাল, এমন অনেক বিলাসবহুল এবং ফ্যাশানদস্তুর পণ্য উপলব্ধ যা তাদের মা-বাবার থেকে বেশি এই প্রজন্মের নজর কাড়ে৷ উচ্চ-শ্রেণীর গয়না থেকে ডিজাইনার পোশাক, স্পোর্টস কার, ঘড়ি, এবং স্মার্টফোন-এমন অনেক কিছু আছে যেগুলি তাদের নজরে আসে৷ যখন কোন বিবেচনামূলক ক্রয়ে 50,000 টাকা ব্যয় করা হয়, তখন 34 বছর বয়সের ঊর্ধ্বের 42% ভারতীয় শহুরে ক্রেতারা বলবে তারা সোনার গহনা কিনবে৷ এটি কমে 33% হয়ে যায় 18-33 বছর বয়সের প্রজন্মের কাছে৷ এর থেকে বোঝা যায় সম্ভাব্য তরুণ প্রজন্মের ক্রেতাদের কাছে সোনার থেকেও আকর্ষণীয় বস্তু আছে৷
শুভ তারিখের বদলে তুলনামূলক কম দামের পয়েন্টযেখানে আগে ধর্মীয় উৎসব এবং কিছু অক্ষয় তৃতীয়া এবং ধনতেরাসের মত কিছু শুভ দিন সোনা কেনার জন্য ভালো বলে বিবেচিত হত, সেখানে বুদ্ধিদীপ্ত নতুন প্রজন্ম সোনা কেনার জন্য তুলনামূলক কম দামের পয়েন্টকে সেরা সময় বলে পছন্দ করে৷ কোন বিশেষ সময়কে সোনা কেনার সময় বলে বিবেচনা করার বদলে যখনই দাম কম হবে তখন সোনা কেনাটাই এদের পছন্দ৷
উপ-ব্র্যান্ডের সৃজনচাহিদার প্যাটার্নে পরিবর্তন অনুযায়ী, মূল গহনার ব্র্যান্ডগুলি উপ-ব্র্যান্ড আনতে শুরু করেছে যারা নির্দিষ্ট ক্রেতা গ্রুপের চাহিদার যোগান দেয়৷ উদাহরণ স্বরূপ, অনেক গহনার ব্র্যান্ডই এখন তরুণ কর্মরতা মহিলাদের আকর্ষিত করার জন্য হালকা ওজনের এবং মিনিমালিস্টিক নকশার উপ-ব্র্যান্ড নিয়ে হাজির হচ্ছে৷
অনুসঙ্গী: সোনায় বিনিয়োগের জন্য কর্মরতা মহিলাদের নির্দেশিকা
Sources:
Source1, Source2
বিকল্প বাজার
বিংশ শতকের প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা সবসময় এমন জিনিস চায় যা নতুন এবং ‘আলাদা’৷ আর বাজার তাদের এই চাহিদা পুরণেরই চেষ্টা করে চলেছে৷ উদাহরণ স্বরূপ, অনলাইন কোম্পানিগুলি এই তরুণ ক্রেতাদের জন্য বাজার খুলে দিয়েছে (বিশেষ করে 25 থেকে 35 বছরের তরুণ মহিলা) যারা ডিজাইন আর স্টাইল নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ভালোবাসে৷ একইভাবে, প্রথাগত ব্রিক অ্যান্ড মর্টার গহনার দোকান একটা নতুন বাজার তৈরি করার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে৷
দীর্ঘ-মেয়াদী স্থায়ীত্বচাহিদার প্যাটার্নে বিবর্তন সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করে যে বিংশ শতকের প্রজন্মের কাছে সোনার চাহিদা দীর্ঘ মেয়াদে দৃঢ় হবে৷ এর কারণ, ভারতীয় মনঃস্তত্ত্বে সোনার মালিকানা নিয়ে একবার বিনিয়োগ করে বহুবছর চলবে বিষয়ক ধারণাটির শিকড় দৃঢ়৷
এর সাথে অতিরিক্ত হিসাবে, ভারতে প্রতি ক্যাপিটা জিডিপি প্রত্যাশিতভাবে 35% বাড়বে 2020 সালের মধ্যে, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের রিপোর্ট অনুযায়ী ৷ এর অর্থ হল যে ভারতে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রোজগার (যা 2030 সালের মধ্যে বিশ্বের বেশি হিসাবে সেট হতে চলেছে) আগামী বছরগুলিতে সোনার চাহিদাকে সমর্থন করবে৷
অনুসঙ্গী: সোনা ক্রয়—আধুনিক বিকল্পগুলিকে আঁকড়ে ধরার সময় এসে গেছে
সার কথাবিংশ শতাব্দির প্রজন্ম সবকিছুই করে একটু আলাদাভাবে৷ এটা তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য৷ এই একই বিষয় সোনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷ তারা সোনা কেনা এবং বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আলাদা এবং নতুন পথ খোঁজে৷ তাদের জন্য, বিক্রেতাকে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রজন্মের চাহিদার যোগান দেওয়ার জন্য কৌশলে পরিবর্তন আনতে হবে, এক্ষেত্রে আর অন্য কোন সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ নেই৷