Published: 01 সেপ্টে 2017
কি কেরালাকে সোনা প্রেমীদের কাছে আনন্দজনক বানিয়েছে
যদিও সোনা প্রীতি ভারতবাসীর কাছে কোন গোপন কথা নয়, তবে কেরালার মানুষদের কাছে এই মূল্যবান ধাতুটির প্রতি অপ্রতিদ্বন্দ্বী আকর্ষণ বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। এখানে কিছু কারণ দেখানো হল যা প্রমাণ করে কেরালাবাসীদের জীবনে সোনা বড় ভূমিকা পালন করে।
সোনা এবং আরাধনা
কেরালা সত্যিই সোনার রাজ্য। এমনকি স্বয়ং ঈশ্বরও এখানে সোনা ভালোবাসেন। কেরালার জনপ্রিয় পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে Rs. 1.2 tn মূল্যের মূল্যবান ধাতু আছে যার মধ্যে সোনাও পরে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে ত্রাভানকোর রাজপরিবার তাদের সোনার সম্পত্তি মন্দিরে বহু বছর ধরে জমাচ্ছে। তার মধ্যে কিছু আইটেম আছে 18 ফিট লম্বা সোনার চেন , 500 কেজি ওজনের একটি সোনার গোছা ,, খাঁটি সোনায় 3.5 ফিট লম্বা মহাবিষ্ণুমাদের একটি প্রতিমূর্তি এবং আরও অনেক কিছু। মন্দিরে A-F এর ছ’টি খিলান আছে, B খিলানটি এখনও পর্যন্ত গুপ্তই আছে। 2014 সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরো দুটি খিলানের (G এবং H) সন্ধান পাওয়া যায় । ইতিহাসে এটি সবথেকে ধনী উপাসনার স্থান হয়ে উঠেছে।
সোনা এবং উৎসব
মন্দিরের পরে, কেরালাবাসীদের স্বর্ণপ্রীতির তালিকায় আসে উৎসব। কেরালায় ওনাম এবং ভিষু উৎসবে সোনা বহুল পরিমাণে বিক্রি হয়। ভিষু হল কেরালাবাসীদের নববর্ষ, যা সাধারণত প্রতিবছর এপ্রিল মাসে পালিত হয়। এটি নিকটভাবে সোনার সাথে সম্পর্কিত- তা সোনার কয়েন থেকে অলঙ্কার উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে হতে পারে, তা সোনার শশা কেনার ক্ষেত্রে হতে পারে, সোনার শশা নববর্ষের মরসুমে কেনার জন্য একটি জনপ্রিয় ফল ।
সোনা এবং অর্থ
কেরালাবাসীদের উৎসবে এবং অন্যান্য সময় সোনা কেনার ফলে, বেলজিয়াম, সিঙ্গাপুর, সুইডেন এবং অস্ট্রেলিয়ার মত স্বতন্ত্র সোনা পরিবেশক কোম্পানির তুলনায়-2016 সালের সেপ্টেম্বর অনুযায়ী কেরালার তিনটি সব থেকে বড় সোনা লোনের কোম্পানির মোট সোনা -250টনের থেকে বেশি হওয়াটা আশ্চর্যের বিষয় নয়।
সোনা এবং গহনা
কেরালার গ্রামগুলির গল্পও একইভাবে চিত্তাকর্ষক। কদুভাল্লি , নামক গ্রামটি কেরালার কোজিকোড়ে শহর থেকে 25 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যেখানে 1কিলোমিটারের মধ্যে 100টির বেশি গহনার দোকান রয়েছে!
পরেরবার যখন আপনি দক্ষিণ ভারত ঘুরতে যাবেন, অবশ্যই কেরালা যাবেন-এটি সোনা প্রেমীদের জন্য সত্যিই আহ্লাদের বিষয়।
সোনা এবং বিবাহ
যখন বিষয়টা গহনার হয়, তখন কোনকিছু সোনার অলঙ্কারকে ঠেকাতে পারেনা যা কেরালীয় বিয়ের কনেকে অলঙ্কৃত করে। উচ্চ মধ্যবিত্ত একজন কেরালীয় বিয়ের কনের সোনার গহনার গড় ওজন হয় 320 গ্রাম এবং তার মূল্য 9 লাখ টাকা, যা কেরালার মেয়েদের সত্যিই সোনার মেয়ে বানিয়ে তোলে!
সাধারণত, বিয়ের কনেরা দৈর্ঘ্য ও স্টাইল বিশেষে সোনার নেকলেস পরে, যা একটা স্তরীভূত চেহারা নেয়। সবথেকে ছোটটির হল কন্ঠহার, যেটি গলার সাথে আটকানো থাকে। একটি কোমনবন্ধও থাকে। কনেকে ঝোলানো কানের দুল পরতে হয়-অনেকটা ঝুমকো-র মত এবং সাথে অনেক ধরণের বালাও পরতে হয় । বেশি সোনা পরলে তা কনের পরিবারের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে প্রতিফলিত করে।
অনুসঙ্গী:শ্রদ্ধা, পদমর্যাদা এবং মর্যাদা—সোনা কেনার সামাজিক সুবিধা
সোনার চাহিদাএমনকি, গ্রামীণ কেরালায় প্রতি ক্যাপিটাল সোনার জন্য মাসিক খরচ প্রায় 210 টাকা, যেটি পুরো দেশের সমস্ত গ্রাম ও শহরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং সোনা খরচে অন্য সেরা ছ’টি রাজ্যের (গোয়া, কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশ, তামিলনাড়ু, জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাঞ্জাব) তুলনায় অনেক বেশি।