Published: 10 সেপ্টে 2018
বিশ্বের সবথেকে বড় স্বর্ণ যাদুঘর- মুসেও দেল ওরো
দেশজ দক্ষিণ আমেরিকান সংস্কৃতির প্রারম্ভিক সময় থেকে শুরু করে প্রায় তিরিশ হাজারেরও বেশি খাঁটি সোনার নিদর্শনের আবাস কলোম্বিয়ার বোগোটার মুসেও দেল ওরো স্বর্ণ যাদুঘরটি অবশ্যই আপনার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে থাকা উচিত৷ এখানে ইতিহাসের পাতায় এই বিশ্বখ্যাত স্থানটির সোনার কাহিনীগুলি আপনার জন্য রইল৷
অসাধারণ দক্ষতার সাথে সংকলিক, একাধিক থিমযুক্ত কক্ষগুলি আপনাকে সময়ের মধ্য দিয়ে নিয়ে জীবজন্তুর ভাষ্কর্য থেকে ধর্মীয় মৌলিক উপদানগুলির বিস্তৃত পরিসর প্রদর্শন করাবে৷ তিন তলা হল সেই স্থান যেখানে স্থায়ী প্রদর্শনী শুরু৷ প্রথম কক্ষটি ‘প্রাক-হিসপানিক কলম্বিয়ার মানুষ এবং সোনা’ (People & Gold in Pre-Hispanic Columbia) হিসাবে পরিচিত৷ এই কক্ষটির বৈশিষ্ট্য ক্যামিলা, মুসিকা, সান অগানতিন, তাওরানো, তিয়েরাদেন্ত্রো, তোলিমা, কুয়েমবায়া, উরাবা আর জেনুত্রিবেস থেকে স্বর্ণকারদের দিয়ে করানো যথার্থ কিছু কীর্তি আর এখানে একটি বিশেষ বিভাগও আছে যেটি ‘কলোম্বাস পরবর্তী’ যুগ হিসাবে নিবেদিত৷
পরবর্তী তলাটি শেমানিক অনুষ্ঠানগুলির গোপনীয়তা উন্মোচন করে আর ‘উৎসর্গীকৃত কক্ষ’ ‘উৎসর্গীকৃত নৌকা’ এবং ‘জলাশয়’-এ বিভক্ত৷ এই ত্রয়ী আয়োজিত অনুষ্ঠানের আচারগুলির তিনটি ধাপতে প্রতিনিধিত্ব করে৷ শেষ কক্ষটি ‘অন্তর্নিহিতকরণ কক্ষ’ যেখানে আপনি আকর্ষণীয় ভিডিওর মাধ্যমে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ের ইতিহাস জানতে পারবেন৷
মুইসকা রাফ্ট যাদুঘরের অন্যতম একটি পুরষ্কৃত অধিকার৷ এই শৈল্পিক মূর্তি একটি প্রাক-কলোম্বিয় সোনার নিবেদন এবং কিংবদন্তী সোনার শহর-এল ডোরাডোর অগ্রদূত হিসাবে জনপ্রিয়৷ প্রদর্শনে দেখানো হয় একটি সোনার ভেলা দেশজ উপজাতীদের অনুষ্ঠানগুলি শুরুর জন্য ব্যবহার করা হত৷ এর পিছনে থাকা কাহিনী হল-গৌতভিতা হ্রদে নতুন প্রধান নিয়োগের আনন্দ উদযাপনের জন্য একটি অনুষ্ঠান সম্পাদিত হত৷ আচার বিধির জন্য, গোষ্ঠীপ্রধানের পদে উত্তরাধিকারী তার শরীর সোনার গুঁড়োয় আচ্ছাদিত করতেন এবং ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকৃত সোনা ও পান্না রত্ন সমেত হ্রদে ঝাঁপ দিতেন৷ যাদুঘরের আরেকটি প্রদর্শন দেখায় কিভাবে গোষ্ঠী প্রধানরা সোনার পালকে সাজতেন৷
এই যাদুঘরটি গর্বের সাথে প্রাক-কলম্বিয় আমলের 1,586 সোনার উপকরণের সংগ্রহের আস্ফালন করে যেই ধাতব বস্তুগুলিতে সেই যুগের শিল্পীদের অসাধারণ দক্ষতার সাক্ষ্য রয়েছে৷ প্রদর্শনী এই উপাদানগুলির ব্যবহার এবং উদ্দেশ্যর ওপর জোড় দেয়, সাথে এই সম্প্রদায়গুলির প্রাত্যহিক জীবনে জড়িয়ে থাকা প্রযুক্তিগুলির ওপরও৷
1934 সালে যেটা কলোম্বিয়ার প্রত্নতাত্ত্বিক উত্তরাধিকার সম্পত্তিগুলির রক্ষা করা ও সংরক্ষিত করার জন্য ব্যাঙ্ক অফ দ্য রিপাবলিক (কলোম্বিয়া)-র কাছে একটা উদ্যোগ হিসাবে শুরু হয়েছিল সেটি আজ দেশের সবথেকে বেশি জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট! গত আট দশক ধরে, এই স্বর্ণ যাদুঘর বেড়ে চলেছে এবং একাধিক পুনঃসংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে আর আজ এটির বৈশিষ্ট্য হল একাধিক প্রদর্শনী কক্ষ, একটি অডিটোরিয়াম বা প্রেক্ষাগৃহ, একটি রেস্টুরেন্ট, একটি ক্যাফে আর একটি স্মারণিক জিনিসের দোকান৷
এটা বলা নিরাপদ যে সোনায় থাকা সব চমকই মুসেও ডেল ওরোতে আছে!